
শুভাশিস ঘোষঃ আপাতত পাটলিপুত্রের সিংহাসন ধরে রাখতে সক্ষম হল বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। ২৮ জানুয়ারি নবমবারের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেবার পর ১২ জানুয়ারি অর্থাৎ সোমাবার এই সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করাই ছিল নীতিশের কাছে ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। তবে ১২৯ বিধায়কের সমর্থনে বিহারের সরকার ধরে রাখার পরীক্ষায় পাশ করল নীতিশ কুমার। বিরোধী বিধায়করা ওয়াক আউট করায়, ভোটা ভুটিতে অংশ নিলেন না। সরকার পক্ষে ভোট দিলেন বিরোধী পক্ষ অর্থাৎ আরজেডির তিন বিধায়ক চেতান আনন্দ, নিলাম দেবী এবং প্রল্যাদ যাদাব। ২৪৩ আসন বিশিষ্ট বিহার বিধানসভায় সরকার গড়তে প্রয়োজন ছিল ১২২ বিধায়কের সমর্থন। সেখানে সরকার পক্ষের বিধায়করা দাবি করেছিলেন তাঁরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে সফল হবে। পাল্টা খেলা হবার হুঙ্কার দিয়েছিল বিরোধী বিধায়করা। সব মিলিয়ে এদিন আস্থা ভোটে জয় পেল বিজেপি সমর্থিত নীতিশের সরকার। তবে এই বিষয়কে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি লালু পুত্র তেজস্বী যাদব। তিনি এই সরকারের বিরতধিতা করার সঙ্গে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে বলেন টানা ৯ বার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ আর ৫ বছরের তিন বার মুখ্যমন্ত্রী হতে এই প্রথম দেখল। নীতিশ কুমারের পদত্যাগকে কটাক্ষ করে বিহারের প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব বলেন, যে কাজ অসম্ভব ছিল ১৭ মাসে সেই কাজ আমরা করেছি।
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার বলেন ২০০৫ থেকে বিহারের বিকাশ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি বিজেপি বিধায়কদের উদ্দেশ্য করে পতেজস্বী যাদব প্রশ্ন করেন মোদিজি গ্যারেন্টি দিয়ে বলুক বিহারের মুখ্যমন্ত্রী আর অন্যকোন দিকে যাবেন না তো। পাল্টা জোট সরকারে উপ মুখ্যমন্ত্রী বিজয়া সিনহা জানান, আমরা বিহারকে অপরাঁধ ও দুর্নীতিমুক্ত করার সংকল্প নিয়েছি। এদিন সকালে রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে শুরু হয় বিহার বিধানসভার অধিবেশন। এরপর স্পিকার আওয়াধ বিহারী চৌধুরীর বিরুদ্ধে সমর্থন হারানোর প্রস্তাব পেশ করেন বিজেপি বিধায়ক নান্দকিশোর যাদাব। ভোটা ভুটিতে ১২৫-১২২ ভোটে সমর্থন হারান আওয়াধ বিহারী চৌধুরীর। সেই সময় কার্যত পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল বিহারে সরকার ধরে রাখার শক্তি পরীক্ষায় পাশ করতে চলেছেন নীতিশ কুমার। লক্ষণীয় বিহারের অধ্যক্ষকে অপসারিত করার সময় ১২৫ বিধায়কের সমর্থন পেলেও, আস্থা ভোটে ১২৯ বিধায়কের সমর্থন গেল নীতিশের ঝুলিতে। তবে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি, জেডিউ, এলজেপি এবং হিন্দুস্তানি আওয়ামি মোরচার জোট বিহার থেকে কত গুলো আসন নরেন্দ্র মোদীকে উপহার হিসেবে তুলে দিতে পারেন তা শুধু সময়ের অপেক্ষা।