
নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুর : মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের স্যালাইন কাণ্ডে গুরুতর অসুস্থ কেশপুরের বাসিন্দা নাসরিন খাতুনের মৃত্যু হল। রবিবার রাতে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বছর চব্বিশের নাসরিন। প্রায় চার মাস ধরে সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। নাসরিনের জামাইবাবু ইনসান আলি জানান, ‘‘দিন দশেক আগে জেনারেল বেডে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল ওকে। ১০ মে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ৯ মে রাত থেকে ফের খিঁচুনি ও বমি শুরু হয়। রবিবার রাতে ডাক্তাররা আমাদের জানান, নাসরিন আর নেই।’’
উল্লেখ্য ১২ জানুয়ারি মেদিনীপুর মেডিক্যালে ‘জাল স্যালাইন’ দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল, গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় কলকাতার এসএসকেএমে ভর্তি করা হয় মাম্পি সিংহ, মিনারা বিবি ও নাসরিন খাতুনকে। তাঁদের মধ্যে মাম্পি ও মিনারা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও ফিরতে পারলেন না নাসরিন। সদ্যোজাত কন্যা সন্তানকে একবার ছুঁয়ে দেখারও সুযোগ হল না তাঁর।
নাসরিনের পরিবার দাবি করেছে, চিকিৎসায় গাফিলতি ও ‘জাল স্যালাইন’-এর প্রভাবেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। তাঁদের অভিযোগ, ঘটনার পর যাঁদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ ছিল, তাঁদের সাসপেন্ড করা হলেও পরে ফের কাজে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পরিবারের আরও অভিযোগ, স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে মৃত নাসরিনের কন্যা সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও, বাস্তবে কোনও সহায়তা মেলেনি। এ প্রসঙ্গে সরকারকে সরাসরি প্রশ্ন করেছেন শোকার্ত পরিবার। শুধু তাই নয়, হাসপাতালে নাসরিনের সঙ্গে থাকা তাঁর শ্বশুর অসুস্থ হয়ে পড়লেও, মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে ‘অভব্য আচরণের’ অভিযোগও তুলেছেন তাঁরা।
নাসরিনের মৃত্যুর পর এবার তাঁর কন্যাসন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত পরিবার। তাঁদের আবেদন, “এই শিশুটির দায়িত্ব যেন সরকার নেয়।”