
ওঙ্কার ডেস্ক: অ্যানিমিয়া ক্রমশ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে ভারতে। প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ভারতে ৬৭.১ শতাংশ শিশু অ্যানিমিয়ার শিকার। শুধু তাই নয় কিশোর, কিশোরী এবং মহিলাদের মধ্যেও অ্যানিমিয়া থাবা বসিয়েছে উল্লেখযোগ্য ভাবে।
অ্যানিমিয়া কী?
অ্যানিমিয়া হল এমন একটি রোগ যেখানে একজনের রক্তে লোহিত রক্তকণিকা বা হিমোগ্লোবিনের সংখ্যা স্বাভাবিক সংখ্যার তুলনায় কম থাকে। আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তের অক্সিজেন বহন করার ক্ষমতাও হ্রাস পায়। যার ফলে নানান শারীরিক সমস্যার মুখোমুখি হন তারা। মূলত আয়রনের ঘাটতির কারণে এই রোগ হয়।
কীভাবে অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করা যাবে এবং এর চিকিৎসা কী?
অ্যানিমিয়ার চিকিৎসা এর অন্তর্নিহিত কারণের উপর নির্ভর করে। তবুও, খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন এনে এই রোগ প্রতিরোধ করা যেতে পারে। যেমন খাবারে যথেষ্ট পরিমাণ আয়রন থাকা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া ভিটামিন বি১২, ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
বিশ্বব্যাপী অ্যানিমিয়ার প্রভাব
তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী প্রায় ৫০০ মিলিয়ন মহিলা এবং ৫ বছরের নীচে থাকা ২৬৯ মিলিয়ন শিশু রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত।
ভারতে অ্যানিমিয়া আক্রান্ত রোগীর পরিসংখ্যান
ন্যাশনাল হেলথ সার্ভে (২০১৯-২০২১) অনুসারে ভারতে অ্যানিমিয়া আক্রান্তের পরিসংখ্যান:
পুরুষ (১৫-৪৯) বছর বয়সী ২৫%
মহিলা (১৫-৪৯) বছর বয়সী ৫৭%
কিশোর (১৫-১৯) বছর বয়সী ৩১.১%
কিশোরী (১৫-১৯) বছর বয়সী ৫৯.১%
গর্ভবতী মহিলা (১৫-৪৯) বছর বয়সী ৫২.২%
শিশু (৬-৫৯ মাস) ৬৭.১%
অ্যানিমিয়া নির্মূলে ভারত সরকারের উদ্যোগ
দেশ থেকে অ্যানিমিয়া দূর করতে ২০১৮ সালে ‘অ্যানিমিয়া মুক্ত ভারত’ কর্মসূচি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার। সরকারের তরফে ৬×৬×৬ কৌশল নেওয়া হয়েছে অ্যানিমিয়া দূর করতে। প্রথম ‘৬’ এর মধ্যে রয়েছে বয়সের ভিত্তিতে ছয়টি বিভাগ। প্রথম বিভাগ হচ্ছে, প্রাক-বিদ্যালয় শিশু (৬-৫৯ মাস), দ্বিতীয় বিভাগ- শিশু (৫-৯ বছর), তৃতীয় বিভাগ- কিশোরী এবং কিশোর (১০-১৯ বছর), চতুর্থ বিভাগ- গর্ভবতী মহিলা, পঞ্চম বিভাগ- স্তন্যদানকারী মহিলা এবং ষষ্ঠ বিভাগ- প্রজনন সক্ষম বয়সের মহিলারা (১৫-৪৯ বছর)।
দ্বিতীয় ‘৬’ এর মধ্যে রয়েছে ছয় পদক্ষেপ। প্রথমত, বিভিন্ন বয়সের শিশু ও মহিলাদের আয়রন ও ফোলিক অ্যাসিড সাপ্লিমেন্ট প্রদান। দ্বিতীয়ত, কৃমিনাশক কর্মসূচি। তৃতীয়ত, ‘শক্ত শরীর স্মার্ট মন’ কর্মসূচি। চতুর্থত, কিশোর, কিশোরী এবং গর্ভবতী মহিলাদের অ্যানিমিয়া টেস্ট করা। পঞ্চমত, সরকার পরিচালিত জনস্বাস্থ্য কর্মসূচিতে আয়রন এবং ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবারের ব্যবস্থা। ষষ্ঠত, ম্যালেরিয়া, হিমোগ্লোবিনোপ্যাথি এবং ফ্লুরোসিস যেসব কারণেও অ্যানিমিয়া হয়, সেগুলির উপর বিশেষ মনোযোগ দিয়ে স্থানীয় অঞ্চলে সচেতনতা এবং চিকিৎসা জোরদার করা। পরের ‘৬’ এর মধ্যে রয়েছে ছয় ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক মেকানিজম। বিভিন্ন মন্ত্রকের মধ্যে সমন্বয়, মনিটরিং-সহ ছয়টি পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে।