
জয়ন্ত সাহা, আসানসোল: জন্মদিনে উপহার পেলে কার না ভালোলাগে! সে উপহার যাই হোক না কেন! তেমনভাবেই জন্মদিনে উপহার পাওয়া মূর্তিটি ছিল তাঁর নিজেরই অত্যন্ত প্রিয়। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর সেই মূর্তির কোথাও স্থান হয়নি। ফিরে এসেছিল মোমের মূর্তির কারিগর আসানসোলের সুশান্ত রায়ের বাড়িতেই। ২০১০ সালের পর থেকে প্রতিটি জন্মদিনে সেই মূর্তিতে মালা পড়িয়ে শ্রদ্ধা জানান ভাস্কর সুশান্ত রায় ।সেই মূর্তিটি অন্য কারোর নয়, সেই মূর্তিটি বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা জ্যোতি বসুর।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে তৎকালীন ক্রীড়া মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী এসেছিলেন আসানসোলের ভাস্কর সুশান্ত রায়ের বাড়িতে ৷ তাঁকে বরাত দিয়েছিলেন জ্যোতি বসুর একটি মোমের মূর্তি বানাতে হবে । ভাস্কর সুশান্ত রায়ের বানানো সেই মূর্তিটি জ্যোতি বসুর ৯০তম জন্মদিনে উপহার দিয়েছিলেন তৎকালীন ক্রীড়া মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী। মূর্তিটি পেয়ে জ্যোতি বসু প্রচন্ড আনন্দ পেয়েছিলেন এবং হেসে বলেছিলেন, “একটি ছোট্ট ভুল আছে ।” তারপর নিজের পকেট থেকে একটি পেন বের করে মূর্তির পাঞ্জাবির পকেটে গুঁজে দিয়ে বলেছিলেন, “এবার একেবারে পারফেক্ট ৷” তখন থেকে ইন্দিরা ভবনেই রাখা থাকত সেই মূর্তি।
জ্যোতি বসুর মৃত্যুর পর রাজ্য সরকার ইন্দিরা ভবন ফাঁকা করে দেয়। না, সেই বিখ্যাত মূর্তিটি রাজ্যের কোথাও ঠাঁই পাইনি। এমনকী বাম নেতারা আলিমুদ্দিন স্ট্রিটেও নিয়ে যাননি সেই মূর্তি। জ্যোতিবাবুর আপ্তসহায়ক জয়কৃষ্ণ ঘোষের কাছে ভাস্কর সুশান্ত রায় জানতে পারেন, জ্যোতি বসুর নিজের খুব প্রিয় সেই মূর্তিটি পড়ে আছে অবহেলায়। আর তারপরেই মূর্তিটি আসানসোলে ফিরিয়ে আনেন ভাস্কর সুশান্ত রায়। তখন থেকেই সুশান্ত রায় নিয়ম করে প্রতি বছরই জ্যোতি বসুর জন্মদিনে সেই মূর্তিতে মালা দেন। মুখের সামনে কেক তুলে ধরেন ৷ সুশান্ত রায় জানিয়েছেন, তার জীবনে প্রথম বানানো মূর্তি হচ্ছে এই জ্যোতি বসুর মূর্তিটি। যেটি জ্যোতি বসুর অত্যন্ত প্রিয় ছিল । তাই তিনি প্রতিবছর জন্মদিন পালন করেন।