
প্রতীতি ঘোষ, ব্যারাকপুরঃ দূর্গা পুজো কমিটির দখল কার হাতে থাকবে! তা নিয়ে বচসা। যার জেরে মর্মান্তিক ঘটনা ব্যারাকপুরে। মৃত্যু হল এক তৃণমূল কর্মীর। মৃতের নাম পার্থ চৌধুরী। মৃত্যুর জন্য স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর ও তার দলবলকেই দায়ী করছে এলাকার মানুষ থেকে মৃতের পরিবার। যদিও কাউন্সিলর সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
যত কান্ড ব্যারাকপুরে। এবার ওল্ড ক্যালকাটা রোডের সুকান্তপল্লী এলাকায়। সূত্রের খবর, রবিবার সন্ধের পর স্থানীয় একটি ক্লাবের দুর্গাপূজার কমিটি গঠন নিয়ে বৈঠক ছিল। অভিযোগ, পুজো কমিটির দখল নেওয়ার জন্য স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর মৌসুমী মুখোপাধ্যায়, তাঁর স্বামী-সহ দলবল নিয়ে বৈঠকে হাজির হয়। কমিটি গঠনের সময় জোর করে বৈঠক ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় বলেই অভিযোগ। আর বাইরের দখল নেয় কাউন্সিলরের দলবল। স্বাভাবিক ভাবেই এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ওই বৈঠকে আটকে ছিলেন, তৃণমূল কর্মীর পার্থ চৌধুরীর স্ত্রীর। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন পার্থ। তিনি গোটা ঘটনার প্রতিবাদ করলে কাউন্সিলরের অনুগামীদের সঙ্গে তার বচসা হয়। সেই সময় তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
পুজো কমিটির সভাপতি সঞ্চিতা কুমার বলেন, “তৃণমূল কাউন্সিলর মৌসুমী মুখোপাধ্যায় প্রথমে বলেছিলেন, পুজোয় তিনি থাকবেন না। তার পর এদিন যখন কমিটি গঠন নিয়ে বৈঠক শুরু হয়, সেসময় তাঁর স্বামী-সহ দলবল নিয়ে আসে। কমিটি গঠন নিয়ে যখন বৈঠক হচ্ছিল, তখন দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বলে, যতক্ষণ না কমিটির তৈরি হবে কেউ বাইরে বেরতে পারবে না। সেই সময় বাইরে গণ্ডগোল বাঁধলে জানতে পারি, পার্থকে মারধর করা হচ্ছে। বেরতে চাইলে আমাকে, এমনকি পার্থর স্ত্রীকেও বেরতে দেয়নি। কমিটি দখল করবে বলেই কাউন্সিলর দলবল নিয়ে এসে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।”
সূত্রের খবর, প্রচণ্ড মারধরের ফলে অচৈতন্য হয়ে পড়েন পার্থ। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে বারাকপুর বিএন বসু মহাকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে যান বারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান উত্তম দাস। তাঁর কথায়, “পুজো কমিটি গঠন নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতালে এসে শুনলাম, মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল দলের এক কর্মীকে। প্রশাসন তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।”
এই ঘটনায় স্বভাবতই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। বিশেষ করে কাউন্সিলরের দলবলের হাতে প্রহৃত হয়ে দলেরই কর্মীর মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে সরগরম এলাকা। ঘটনার খবর শুনে আসেন বিজেপি নেতা কৌস্তব বাগচী। কাউন্সিলরের শাস্তির দাবি তুলেছে এলাকার মানুষ। সোমবার সকালেও ১২ নং ওয়ার্ড এলাকা থমথমে।