
ওঙ্কার ডেস্ক : ওয়াকফ (সংশোধনী) আইন প্রণয়ন করা নিয়ে কেন্দ্র সরকারকে তীব্র আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে হওয়া ইমামদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, “ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের অগ্রগতিতে সব ধর্মের মানুষ সমানভাবে অবদান রেখেছেন। অথচ আজ সংবিধানকে দুর্বল করার চেষ্টা চলছে।”
মুর্শিদাবাদে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক অশান্তির প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, “এই অশান্তি স্বতঃস্ফূর্ত ছিল না। কিছু চক্র পূর্ব পরিকল্পনা করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে কারা এই ঘটনার পেছনে রয়েছে।” তিনি স্পষ্ট জানান, “বাংলার মাটি সাম্প্রদায়িকতা বরদাস্ত করে না। আমরা সব ধর্মকে নিয়ে চলতে চাই, এটাই বাংলার ঐতিহ্য।”
ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলে মমতা বলেন, “আপনারা এত তাড়াহুড়ো করে এই আইন পাশ করলেন কেন? সীমান্তে থাকা বাংলা রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে কি আপনারা অবগত ছিলেন না? এটা কি দেশের মঙ্গল করবে, না কি সংঘাত বাধানোর কৌশল?”
তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশ্যে বলেন, “দয়া করে এই ধরনের অমানবিক আইন পাশ হতে দেবেন না। আপনার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কী করছেন, সেই বিষয়ে দয়া করে নজর দিন।” মমতার অভিযোগ, এই আইন দেশের ফেডারেল কাঠামোর বিরোধী এবং রাজ্যগুলির অধিকার খর্ব করছে।
সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি সর্বধর্ম সমভবের পক্ষে। রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ আমাদের তাই শিখিয়েছেন। আমরা কালীমন্দির সংস্কার করি, দুর্গাপুজো করি—তখন বিজেপি কোথায় থাকে? তারা বলে আমরা নাকি হিন্দুদের উৎসব করতে দিই না। অথচ সরস্বতী পুজো প্রায় প্রতিটি বাড়িতে হয়। বাংলায় সকল ধর্মের মানুষ সম্মান পায়।”
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর এই ভাষণ কেন্দ্রের নীতির বিরুদ্ধে তার কণ্ঠস্বর আরও চড়া করার ইঙ্গিত দিচ্ছে। সাম্প্রদায়িকতা ও কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার যে অবস্থানে রয়েছে, তা আরও একবার স্পষ্ট করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।