
বিপ্লব দাশ : রাজনীতির ঠাটবাটটাই এখন সাহস চালিত। তা মুখে হোক কিংবা ভীতি প্রদর্শনে হোক, যার পাল্লায় যত সাহস তার কদর তত। এথিক্সের আর মূল্য কই ! চলে না। শিক্ষাদীক্ষাও কোন দূর ছাই। বস্তুত সংসদীয় গণতন্ত্রের যুগ বদল অনেক ঘটে গেছে। এখন যা হামেশাই দৃশ্যগত, তা আসলে এই সাহসের বাইপ্রোডাক্ট। কেউ কেউ জানেন, মনস্তত্ত্বে একটা কথা আছে, যা হল, মানুষ কখনোই তার মানসিক বিচ্যুতি চেপে রাখতে পারে না। বহিঃপ্রকাশ হবেই।
ভারতীয় রাজনীতির কথা টেনে বক্তব্যের পরিসর বাড়ানোর দরকার নেই। নমুনা হিসেবে যদি আমরা এই রাজ্যকে সামনে আনি তাহলে দেখবো নেতাদের আচরণে, কথাবার্তায়, চালচলনে যেন এটাই ভেন্টিলেট হয়ে চলেছে। কেন না, শিক্ষা যে পরিশুদ্ধতা আনে তা এঁদের ঝুলিতে মেলে না। এঁদের রাজনৈতিক বিজ্ঞতা হল তার পক্ষে কে নেই, এটাই খুঁজে বের করা। এঁরা এই ‘নেই’ কিংবা ‘না’ শুনতে পারেন না। কারণ এই ‘নেই’ কিংবা ‘না’ শুনলে আপনা থেকেই সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। এটা মনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। ওই যে বললাম, শিক্ষা যে পরিশুদ্ধতা দেয় তা এঁদের ঝুলিতে মিলবে না। তাই শুদ্ধিকরণ বা সংশোধন অবধারিতভাবে অসম্ভব।
সম্প্রতি অডিও-কাণ্ডে রাজ্য রাজনীতিতে যে রাজনৈতিক চরিত্র উন্মোচিত হয়েছে, এটা কিন্তু হঠাৎ কোনো মেঠো-স্টাইল নয়। বরং বলা ভালো, কারো কারো মস্তিষ্কে অসৌজন্যতার ভার এতটাই ভারাক্রান্ত যে তাঁর পক্ষে এটা আর বয়ে বেড়ানো সম্ভব হয়ে উঠছে না। সামান্য ধাক্কায় তা ফেটেফুটে বেরিয়ে আসছে। অথচ যুগ এগিয়েছে, ২০ বছর আগে হলে হয়তো এটা কেউ টেরই পেত না। কিন্তু ওই যে নাটের গুরু হল সোশ্যাল মিডিয়া !
এই সোশ্যাল মিডিয়াকে কেউই মেনে নিতে পারছেন না। আবার কাজে না লাগিয়েও উপায় নেই। এর জন্য এখন আবার রাজনৈতিক দলগুলির ‘আইটি সেল’ রয়েছে। সে যে পক্ষই হোক না কেন। তাই ২১শে জুলাইয়ের প্রস্তুতিকে সামনে রেখে কেষ্ট কাজলের ঝামেলা মেটাতে দলকে যতটা উদ্যোগী হতে হয়, তার কি ছিটেফোঁটা কেউ বলেছেন যে “একটু ভদ্রসভ্য হও তো বাছা”। ওই যে শুরু্র কথাটা, রাজনীতির ঠাটবাটটাই এখন সাহস চালিত। শিক্ষিত করে লাভ কী ! বরং মূর্খের মুখে পাট্টার আওয়াজ বেশি। এই আওয়াজটাই চাই। ওই যে- এথিক্সের আর মূল্য কই ! চলে না।