
নিজস্ব সংবাদদাতা : “ভারতের জল পাবে না পাকিস্তান, ভারতীয়দের রক্ত নিয়ে খেলার জন্য তাদের চরম মূল্য দিতে হবে”। বিকানেরের দেশনোকে দেশের ১০৩টি অমৃত ভারত স্টেশনের ভার্চুয়াল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এই ভাষায় কার্যত হুঙ্কার দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের প্রতিক্রিয়া এক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। এটি প্রতিশোধ নয়, এটি ন্যায়বিচার- এটি অপারেশন সিঁদুর”। তিনি একে একটি শক্তিশালী ভারতের রৌদ্র রূপ বলে অভিহিত করেন। সাফ জানিয়ে দেন, “আগে আমরা তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে আক্রমণ করতাম, এখন আমরা তাদের বুকে আঘাত করি। এটি ভারতের নতুন মুখ – যা সন্ত্রাসকে তার মূল থেকে চূর্ণ করে দেয়” ।
প্রধানমন্ত্রী তিনি বলেন, পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলা ১৪০ কোটি ভারতীয়ের উপর আক্রমণ। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, কীভাবে আক্রমণকারীরা তাদের ধর্ম জিজ্ঞাসা করার পর হিন্দু মহিলাদের কপাল থেকে সিঁদুর খুলে ফেলেছিল, তিনি আরও বলেন, “প্রতিটি ভারতীয় সন্ত্রাসীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য সংকল্পবদ্ধ হয়েছিল এবং আমাদের বাহিনী সেই প্রতিশ্রুতি পালন করেছে।” মোদী বলেন, “সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীকে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল। একসঙ্গে তারা একটি ‘চক্রব্যূহ’ তৈরি করেছিল যা পাকিস্তানকে নতজানু করতে বাধ্য করেছিল”।
মোদী বলেন, ভারতের কন্যাদের পবিত্র সিঁদুর ‘বারুদে’ পরিণত হলে কী হয় তা বিশ্ব এখন দেখেছে। ২২ এপ্রিল পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার পর শুরু হওয়া “অপারেশন সিঁদুরে”র কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২২ মিনিটের মধ্যে নয়টি বড় সন্ত্রাসী আস্তানা ধ্বংস করা হয়েছে। ভারত পারমাণবিক হুমকির ভয় পায় না। আমাদের প্রতিক্রিয়া সময়োপযোগী হবে এবং পদ্ধতিটি আমাদের সশস্ত্র বাহিনী নির্ধারণ করবে।” “অপারেশন সিঁদুরে”র অধীনে ভারতের নির্ভুল হামলার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছেন, পাকিস্তানের রহিমিয়ার খান বিমানঘাঁটি “আইসিইউতে” রয়েছে। পাকিস্তান বিকানেরে নল বিমানঘাঁটিকে লক্ষ্যবস্তু করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, “নলে কোনও ক্ষতি হয়নি, তবে পাকিস্তান জানে না কখন তাদের নিজস্ব বিমানঘাঁটি আবার খোলা হবে”। প্রধানমন্ত্রী বালাকোট-পরবর্তী তাঁর ২০১৯ সালের প্রতিশ্রুতিকে তুলে এনে বলেন, “সৌগন্ধ মুঝে ইস দেশ কি মিট্টি কি, ম্যায় দেশ না মিটনে দুঙ্গা।” তিনি বলেন, “যারা বোনদের কপাল থেকে সিন্দুর মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিল তাদের গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভারত শক্তি এবং ন্যায়বিচারের সঙ্গে জবাব দিয়েছে,”।
এর আগে, তিনি তুলে ধরেন যে কীভাবে সরকারের পরিকাঠামোগত ব্যয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে এবং স্থানীয় ব্যবসাকে উৎসাহিত করে। এদিন তিনি পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ার জয়চণ্ডী পাহাড়, হুগলির পানাগড় এবং কল্যাণীর ঘোষপাড়া স্টেশন সহ ১০৩টি অমৃত ভারত স্টেশনের ভার্চুয়ালি উদ্বোধনও করেন। এদিন দেশনোকের করণী মাতা মন্দিরে প্রার্থনা করেন মোদী। বলেন, “করণী মাতার আশীর্বাদ একটি উন্নত ভারত গড়ে তোলার সংকল্পকে আরও শক্তিশালী করেছে”।