
ওঙ্কার ডেস্ক; দিঘার মাইতি ঘাটের কাছের কাছে রবিবার বিকালে সমুদ্রের জলে ভেসে উঠল জগন্নাথদেবের কাঠের মূর্তি। মূর্তি ভেসে আসার পর থেকেই রিতিমত শোরগোল পড়ে গেছে সৈকত শহর দিঘায়। মাইতি ঘাটে নতুন ঘাট তৈরির কাজ চলছিল। হঠাৎই মিস্ত্রিদের চোখে পড়ে জলে ভাসছে বড় একটা কাঠের মূর্তি। জল থেকে তুলে এনে দেখা গেল, ওই কাঠের মূর্তিটি প্রভু নীলাচল জগন্নাথ দেবের। মুহূর্তের মধ্যে এই খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী থেকে পর্যটকরা ভিড় জমান সেখানে।
৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ার দিন জগন্নাথ মন্দিরের শুভ উদ্বোধন করবেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। আশ্চর্যজনকভাবে ওই জগন্নাথ দেবের মন্দিরের সামনে যে ঘাটে তৈরি হচ্ছে সেখানেই জগন্নাথ দেবের কাঠামো ভেসে ওঠে। নেহাত কাকতলীয় না, দেব-মহিমা নিয়ে এখন শুরু হয়েছে চর্চা। সকলেই এই ঘটনায় স্তম্ভিত। মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে পড়ে এই ঘটনা। সোশাল মিডিয়ায় তা ছড়িয়ে পড়ে ঝড়ের বেগে। লোকমুখে দূরদূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে ঘটনার কথা। কেনই বা মন্দির ঘাটেই উঠল এনিয়ে চলছে জল্পনা।
শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসিয়াল পেজেও এনিয়ে পোস্ট করা হয়েছে। কিন্তু বিকাল গড়িয়ে সন্ধে ও রাত হলেও জগন্নাথ দেবের ওই মূর্তিটি কেউ গ্রহণ করেনি। শেষমেস রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ দিঘা স্টেশন সংলগ্ন এলাকার এক স্থানীয় বাসিন্দা অবনী সামন্ত তাঁর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে শুদ্ধিকরণ সেরে পূজা করেন। প্রসাদ খেতে ও মূর্তি দেখতে ভিড় জমান মানুষ জন।
অক্ষয় তৃতীয়া থেকে এ রাজ্যে সমুদ্রপাড়েই মিলবে জগন্নাথ দেবের দর্শন। ৩০ এপ্রিল দিঘায় উদ্বোধন হতে চলেছে পুরীর আদলে তৈরি জগন্নাথ মন্দিরের। দিঘায় নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর তার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে ইসকনের হাতে। মন্দিরের দ্বারোদঘাটনের আগের দিন মন্দির চত্বরে আয়োজন করা হবে মহাযজ্ঞের। যেখানে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন, বেলুড় মঠ, ভারত সেবাশ্রমের মহারাজদের। রাজ্য সরকারের তরফে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে বিশিষ্ট শিল্পপতিদেরও।
তার আগে নবান্ন সভাঘরে মুখ্যসচিব-সহ বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে প্রস্তুতি বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। উপস্থিত ছিলেন ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, সুজিত বসুর মতো মন্ত্রীরা।
নবান্ন সূত্রে খবর, দিঘায় প্রায় ২২ একর জমির উপর তৈরি জগন্নাথ মন্দির করতে খরচ হয়েছে প্রায় আড়াইশো কোটি টাকা। ২০২২ সালের মে মাসে মন্দির তৈরির কাজ শুরু করে হিডকো। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের মতোই, এখানেও ধ্বজা উত্তোলন হবে। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে দেবতার প্রাণ প্রতিষ্ঠা উপলক্ষ্যে এখন বাঙালির প্রিয় সৈকতশহরে সাজসাজ রব।