
স্পোর্টস ডেস্ক :টানা পাঁচটি হারের পর চলতি ইন্ডিয়ান সুপার লিগে এ বার ওডিশা এফসি-র মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল এফসি। নতুন কোচ অস্কার ব্রুজোনের প্রশিক্ষণে এই প্রথম মাঠে নামবে তারা। গত ম্যাচের দিনই ভোরে কলকাতায় এসে পৌঁছন তিনি এবং সে দিন বিকেলে দলের ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়ামেও চলে আসেন তিনি। তার পর দু’দিন অনুশীলনও করেছে। এত কম সময়ে দলের মধ্যে আমূল পরিবর্তন আনা যে সম্ভব নয়, তা তিনি খুব ভাল করেই জানেন। তাই কৌশলে এক এক করে দলের সমস্যাগুলির যথাসম্ভব দ্রুত সমাধান করা শুরু করেছেন তিনি।
এ জন্য সময়ও চাইছেন লাল-হলুদ বিভাগের নতুন কোচ। নতুন চ্যালেঞ্জ যে বেশ কঠিন, তা বুঝেই নিয়েছেন ব্রুজোন। তবে তাঁর বাস্তব লক্ষ্য যে সেরা ছয়ে থাকা, তাও জানিয়ে দিতে ভোলেননি। মঙ্গলবারের ম্যাচ খেলতে ভুবনেশ্বর উড়ে যাওয়ার আগে সোমবার সকালে অনুশীলনের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অস্কার বলেন, এ পর্যন্ত আমি মাত্র দু’বার দল নিয়ে অনুশীলনে নামতে পেরেছি। তাও গতকাল সেইসব খেলোয়াড়দের নিয়ে মাঠে নেমেছিলাম, যারা ডার্বিতে খেলেনি। আজই প্রথম সবাইকে নিয়ে অনুশীলন করলাম। সবাইকে বুঝিয়েছি, দল এখন তাদের কাছে কী চায়। ওরা ধীরে ধীরে তা বুঝতেও পারছে বলে মনে হচ্ছে।
কী কী করণীয় তাঁদের এখন, তার তালিকা দিয়ে অস্কার বলেন, “আমাদের আরও চাপ নিতে ও পাল্টা চাপ দিতে হবে। খেলায় আরও তীব্রতা বাড়াতে হবে। আরও সঙ্ঘবদ্ধ ফুটবল খেলতে হবে। রক্ষণে ট্রানজিশনের গতি আরও বাড়াতে হবে। নিজেদের মধ্যে ব্যবধান আরও কমাতে হবে। এর আগের ম্যাচগুলোতে প্রতিপক্ষ মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আমাদের সমস্যায় ফেলেছে, উইং দিয়ে আক্রমণ করে আমাদের রক্ষণে ফাটল ধরিয়েছে। এ বার আর তা হতে দেওয়া যাবে না। এ বার আমরা সফল হতে চাই। তবে তা কোচের পরিকল্পনার জন্য নয়, খেলোয়াড়দের দক্ষতার জন্য। তাদের বুঝতে হবে, এ ছাড়া তাদের আর কোনও রাস্তা নেই। আমাদের ইতিবাচক ফল পাওয়ার প্রবণতা থাকা দরকার”।
মঙ্গলবার তাদের সামনে ওডিশা এফসি, যারা গত চারটি ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটিতে জয় পেয়েছে। দু’টি হার ও একটি ড্র নিয়ে তারা এখন লিগ টেবলের নীচের দিকে রয়েছে। গত বছর বসুন্ধরা কিংসের কোচ হিসেবে ওডিশার বিরুদ্ধে দু’টি ম্যাচে দল নামিয়েছিলেন অস্কার। সেই অভিজ্ঞতা থেকে প্রতিপক্ষ সম্পর্কে বলেন, “গত বছর ঘরের মাঠে আমরা জিতি ও ওদের মাঠে একটা সেটপিস গোলের জন্য হেরে যাই। তাই ওদের শক্তি-দুর্বলতা কিছুটা হলেও জানি আমি। তখন ওদের নিয়ে চর্চা করেছিলাম, এবারেও করেছি। ওরা যথেষ্ট শক্তিশালী দল। ওদের বিদেশীরা উইং দিয়ে দ্রুত আক্রমণে ওঠে। গত ম্যাচেও এই ব্যাপারটা দেখেছি। তবে আমরা আমাদের মানসিকতা বদলে ভাল লড়াই করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। এ পর্যন্ত একটা ম্যাচও জিততে পারিনি আমরা। এ বার হয়তো জেতার মতো খেলতে পারব”।
হাতে সময় কম। তাই আগে গোল খাওয়াটা বন্ধ করতে চান অস্কার। গুরুত্বের দিক থেকে আক্রমণের সমস্যা সমাধানকে তার পরে রাখছেন বলে জানান তিনি। বলেন, “গত কয়েকটা ম্যাচের পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখতে পাবেন ইস্টবেঙ্গল প্রতিপক্ষের চেয়ে বেশি সুযোগ তৈরি করতে পেরেছে। কিন্তু গোল পাচ্ছে না। এই জায়গাটায় আমাদের শোধরাতে হবে। প্রতিপক্ষের গোলের সামনে আমাদের আরও তৎপর হতে হবে। এটা হয়তো এখনই পুরোপুরি আনা যাবে না। তবে রক্ষণে তৎপরতা ও মনসংযোগ বাড়িয়ে গোল খাওয়াটা আগে কমাতে হবে আমাদের। সে রকম ভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি”।