
নিজস্ব সংবাদদাতা, হুগলি : হুগলি জেলার চুঁচুড়া ষন্ডেশ্বর তলা সহ আশেপাশের বিস্তীর্ণ এলাকায় গতকাল সন্ধ্যায় আচমকা এক বিধ্বংসী ঝড় বয়ে যায়। সন্ধ্যার পর গঙ্গার বুক থেকে শুরু হওয়া এই ঝড় কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই চরম তাণ্ডব চালায়। স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন এই ঝড় ‘টর্নেডো’।
ঝড়ে ভেঙে পড়ে একাধিক গাছ, বিদ্যুৎবাহী খুঁটি ও ইলেকট্রিক পোস্ট। তার ফলে শহরের বহু এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। চুঁচুড়া, উত্তর চন্দননগর, খুশিগলি, শ্যামবাবুর ঘাট— একাধিক এলাকায় বাড়ি ও গাড়ির উপর গাছ পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌরসভা, দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা রাত থেকেই উদ্ধারকাজে নেমে পড়েছেন। ঝড়ের সময়ে চুঁচুড়ার ষন্ডেশ্বর তলায় চলছিল বৈশাখী মেলা। ঝড়ের দাপটে মেলার বহু দোকান, শিশুদের রাইডিং ও অন্যান্য স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ষন্ডেশ্বর মন্দির সংলগ্ন একটি ছোটো মন্দিরের উপর গাছের ডাল পড়ে আংশিক ক্ষতি হয়, যদিও মূল মন্দির অক্ষত রয়েছে।
শ্যামবাবুর শ্মশান ঘাট এলাকায় একটি গাছ ভেঙে পড়ে গুরুতর আহত হন স্থানীয় দোকানদার বিশ্বজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে, ব্যান্ডেল বন মসজিদের পাশের একটি বাড়ির উপর বিশালাকৃতি গাছ ভেঙে পড়লে, দুই মহিলা সেখানে আটকে পড়েন। দমকল বাহিনী জানালা ভেঙে তাঁদের উদ্ধার করে। হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার স্বাস্থ্য দপ্তরের পূর্ণ পারিষদ সদস্য জয়দেব অধিকারী জানান, ঝড়ে শহরের একাধিক এলাকায় বড় গাছ উপড়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় সেই গাছ সরাতে সমস্যা হচ্ছে। তবে দপ্তর ও দমকল যৌথভাবে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে।বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীরা ঝড় থামার পর থেকেই মেরামতির কাজে লেগে পড়েছেন। তবে পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে কিছুটা সময় লাগবে বলে জানা গিয়েছে।প্রাক-বর্ষার এই হঠাৎ ঝড় শহরের জনজীবনকে নাজেহাল করে দিল। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপে বড় দুর্ঘটনা কিছুটা হলেও এড়ানো গিয়েছে, তবে ক্ষতির পরিমাণ বেশ গুরুতর।