
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা : বুধবার রাতে কলকাতায় ফরেছে পাটুলির বৈষ্ণবঘাটার বাসিন্দা বিতান অধিকারীর কফিন বন্দি দেহ। পহেলগামে জঙ্গি হামলায় নিহত ২৬ জনের মধ্যে তিনিও একজন। কিন্ত্ কলকাতায় ফেরার পর বিতানের স্ত্রীর কথাবার্তা নিয়ে দেখা দিয়েছে বিতর্ক। অন্যদিকে ছেলের মৃত্যুতে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বিতানের বৃদ্ধা মা ও বাবা।
নিহত বিতানের পরিবারকে ইতিমধ্যেই আর্থ সাহায্য করেছে জম্মু ও কাশ্মীর সরকার। কেন্দ্র ও রাজ্য থেকেও আরও ক্ষতিপূরণ আসতে পারে। সেই অর্থের পুরোটা যেন বিতানের স্ত্রী সোহিনীকে না দেওয়া হয়, এমন আর্জিই জানিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, , “ওঁদের পরিবারের যা সমীকরণ, তাতে এই দু’জন ঘোরতর অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।” কুনালের এই পোস্ট ঘিরে চর্চা শুরু হয়েছে। কুনাল ঘোষের এই আর্জিকে কেউ কেউ যুক্তি সঙ্গত বলেও জানিয়েছেন। কিন্তু তিনি কোন সমীকরণের কথা বোঝাতে চাইছেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।
বুধবার রাতে বিতানের স্ত্রী কলকাতা ফেরার পর তাঁর যে সব কথা শোনা গেছে এবং আচরণ দেখা গেছে তাতে কুনালের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। গতকাল বিমানবন্দরেই অঝোরে কাঁদতে দেখা যায় বিতানের স্ত্রী সোহিনীকে। তাঁদের সন্তানকে কোলে তুলে নেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোহিনীকে বলেতে শোনা গিয়েছে, শুভেন্দু অধিকারীর ভরসায় ফিরেছেন তিনি। তারপরই পহেলগামে কীভাবে হিন্দুদের বেছে বেছে হত্যা করা হয়েছে সে ঘটনার কথাও জানান।
কুনাল তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “প্রথমে টিভিতে বাইট: হিন্দু মুসলমান বেছে মারেনি। পরে বিজেপি নেতাদের সামনে: হিন্দু বলে মেরেছে। মুখ্যমন্ত্রী-সহ রাজ্যের প্রশাসনের অন্তত কুড়িটি ফোন। ফেরার সব সাহায্য। ফিরে বিজেপির সামনে: আপনাদের ভরসায় ফিরেছি। মৃতের বাবা-মা অসহায়। ছেলে নেই। পুত্রবধূ তাঁদের কাছে থাকতেন না, দেখতেন বলে খবর নেই। কলকাতাতেই অন্যত্র থাকতেন। বাবা মা অনিশ্চয়তায়।” সঙ্গে আরও লেখেন, “এখন শোকের বাতাবরণ। তাই অপ্রিয় প্রশ্ন তুলছি না। বাড়াবাড়ি রাজনৈতিক দ্বিচারিতার নাটক, শেখানো সংলাপে বিষ ছড়ানো দেখলে বলবই। যিনি যা মনে করেন, করবেন।”
অবশ্য অতীতের ঘটনা থেকে কুনালের আশঙ্কা এক্কেবারেই অযৌক্তিক, একথা বলা যায় না।অনেকেই মনে করছেন, জঙ্গি হামলায় স্বামীর মৃত্যুতে তিনি সরাকি আর্থিক সাহায্য পাওয়ার পর যদি শশুরবাড়ির কথা অবজ্ঞা করেন তাহলে বিতানের অসহায় বাবা মা বিপদে পড়বেন। এ কারণে কুনাল ওই ধরণের মন্তব্য করে থাকতে পারেন বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।