
স্পোর্টস ডেস্ক :ইন্ডিয়ান সুপার লিগকে (আইএসএল) তাঁর জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতা বলে মনে করেন বেঙ্গালুরু এফসি অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী। ২০২৪-২৫ মরশুম শুরুর আগে ছেত্রী স্বীকার করেছেন যে, আইএসএল-এর যে উন্নতি দেখেছেন তিনি, ২০১৪ সালে তা কল্পনাও করতে পারেননি। বছরের পর বছর ধরে যে ভাবে প্রচুর তরুণ ফুটবল প্রতিভা আবিস্কার করেছে আইএসএল এবং নতুন ক্লাবগুলোর প্রবেশের সাথে আরও বড় হয়ে উঠেছে এই লিগ, তা তাঁর কাছে প্রশংসনীয়।
“১০ বছর আগে যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করা হত যে, আইএসএল কোথায় পৌঁছবে বা ভারতীয় ফুটবলে এর কার্যকারিতা কেমন হবে, আমি তা অনুমান করতে পারতাম না। আটটি ক্লাবের দুই মাসব্যাপী লিগ থেকে এই লিগ এখন প্রায় সারা বছর ধরে চলছে। অসাধারণ উন্নতি হয়েছে এই লিগের”, আইএসএলের সঙ্গে কথা বলার সময় বলেন ছেত্রী।
এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টগুলোর মধ্যে অন্যতম হয়ে উঠেছে আইএসএল। ভবিষ্যতে, এ দেশের একজন ফুটবল ভক্ত হিসেবে আমি আশা করি, এটি আরো দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাবে এবং আশা করি আগামী ১০ বছর গত ১০ বছরের চেয়ে অনেক ভাল হবে”।
‘মহমেডান এসসি যেখানেই যাবে, তাদের সমর্থক থাকবে’
২০০২-এ মোহনবাগানে তার সিনিয়র কেরিয়ার শুরু করেন ছেত্রী এবং ২০০৮-০৯-এ ইস্টবেঙ্গল এফসিতে সংক্ষিপ্ত সময়ও কাটান। কলকাতা ক্লাবগুলোর জনপ্রিয়তার বিষয়ে ভালভাবেই ওয়াকিবহাল তিনি। তাই মহামেডান এসসি আইএসএলে যোগ দেওয়ায় তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশাবাদী। এ বছর ইন্ডিয়ান সুপার লিগে কলকাতার মহমেডান এসসি যোগ দিচ্ছে। ২০২৩-২৪ আই-লিগে জয়ী হওয়ার সুবাদে তারা এই মরশুমে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে।
লিগের নয়া দল নিয়ে ছেত্রী বলেন, “ওরা অসাধারণ। মহমেডান এসসি যখন খেলবে, তখন তারা কোথায় খেলছে, সেটা কোনও ব্যাপার হবে না। যখন আমি কলকাতায় ছিলাম এবং প্রতি সপ্তাহে মহমেডান এসসি-র বিপক্ষে খেলতাম, সে তারা দিল্লির আম্বেদকর স্টেডিয়ামে খেলুক বা মুম্বইয়ের কুপারেজ স্টেডিয়ামে খেলুক, স্টেডিয়ামগুলো সবসময় সমর্থকে ভরা থাকত। বিশ্বাস করুন, তারা যেখানেই যাবে, তাদের সমর্থক থাকবে। আমি সত্যিই রোমাঞ্চিত যে মহমেডান এসসি এ বার আইএসএলে খেলছে”।
আইএসএল ২০২৪-২৫ মরশুম শুরু হবে মুম্বই সিটি এফসি এবং মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের মধ্যে, ১৩ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার, বিবেকানন্দ যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনে। ছেত্রীর নেতৃত্বাধীন বেঙ্গালুরু এফসি ১৪ সেপ্টেম্বর, শনিবার, ইস্টবেঙ্গল এফসির বিরুদ্ধে শ্রীকান্তিরাভা স্টেডিয়ামে নামবে।
ছেত্রীর আদর্শ
ভারতের হয়ে ১৯ বছরের গৌরবময় কেরিয়ারের পর এ বছর আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নিয়েছেন ছেত্রী। ২০ বছরেরও বেশি সময়ের পেশাদার ফুটবল জীবন শেষ করে তিনি এখন ৪০ বছর বয়সী। কিন্তু দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক দুই ফুটবলের প্রবীণ ফুটবলারদের মধ্যে যাঁরা তাঁকে একজন ভাল ফুটবলার হয়ে ওঠার জন্য অনুপ্রাণিত করেছেন, তাঁদের কথা ভোলেননি।
তাঁদের প্রসঙ্গে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক বলেন, “ভাইচুং (ভুটিয়া) ভাই আমার জীবনে বিশাল প্রভাব ফেলেছে। আমার প্রজন্মে, দেশে ভাইচুং ভাই, আইএম বিজয়ন, রেনেডি সিং ছিলেন বড় বড় নাম। আমরা প্রথমে টেলিভিশনে বেশি আন্তর্জাতিক ফুটবল দেখতে পেতাম না। রোনাল্ডো (ব্রাজিল), থিয়েরি অঁরি, রুদ ফান নিস্তেলরুই—আমার ওপর এদের বিশাল প্রভাব ছিল। আমি এই ফুটবলারদের থেকে কিছু না কিছু শেখার চেষ্টা করতাম এবং তাদের খেলা দারুণ উপভোগ করতাম”।