
নিজস্ব সংবাদদাতা : ১৮ দিন ধরে বিকাশ ভবনের সামনে আন্দোলনে রয়েছে শিক্ষক শিক্ষিকারা। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, আন্দোলনকারী শিক্ষক শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা যাবেনা। বিকাশ ভবনের বদলে অন্য স্থানে আন্দোলন চালিয়ে যাবার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। শনিবার, হাইকোর্টের রায়ে সাড়া দিয়ে আন্দোলনকারীরা জানিয়ে দিলেন, অবস্থান বদলাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু আন্দোলন থামছে না, বরং আরও সংগঠিতভাবে চলবে।
শুক্রবার হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, ২০১৬ সালের ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের আন্দোলনের জন্য সেন্ট্রাল পার্কের সুইমিং পুল লাগোয়া অঞ্চল নির্ধারিত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সেখানে ২০০ জন অবস্থানকারীর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনকে সেখানে বায়ো টয়লেট, পানীয় জলের ব্যবস্থা ও প্রয়োজনে অস্থায়ী তাঁবুর ব্যবস্থাও করতে বলা হয়েছে। এরপরই চাকরিহারা আন্দোলনকারীরা জানান, তাঁরা বিকাশ ভবন থেকে সেই নির্ধারিত জায়গায় সরবেন।
শনিবার আন্দোলনের ১৮তম দিনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আন্দোলনকারীরা জানান, সমস্ত সাংসদদের কাছে চিঠি পাঠানো হবে, যাতে চাকরি হারানো এই শিক্ষকদের ইস্যু লোকসভায় গুরুত্ব পায়। তাঁদের স্পষ্ট বার্তা, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে যদি সোমবারের মধ্যে কোনও সদুত্তর না আসে, তবে তাঁরা আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাবেন। সোমবারের মধ্যে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করতে চান শিক্ষক শিক্ষিকারা। যদিও তাঁরা এও জানিয়ে দিয়েছেন, সেন্ট্রাল পার্কে যতক্ষণ না পর্যন্ত হাইকোর্ট নির্দেশিত পরিকাঠামো পুরোপুরি তৈরি না হচ্ছে, ততদিন বিকাশ ভবনের সামনেই তাঁদের অবস্থান চালু থাকবে। অর্থাৎ হঠাৎ করেই তাঁরা স্থান পরিবর্তন করছেন না, বরং নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ না হলে পুরনো অবস্থানেই থাকবেন।
গত বৃহস্পতিবার বিকাশ ভবনের সামনে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তির অভিযোগ ওঠে। আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, তাঁদের উপর লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। যদিও এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার জানান, “পুলিশ যথেষ্ট ধৈর্য দেখিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হওয়ায় বাধ্য হয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়।”
চাকরিহারাদের পক্ষ থেকে বার্তা স্পষ্ট—তাঁদের লড়াই ন্যায়সঙ্গত, তাই সহজে থামার নয়। জায়গা বদলালেও তাঁদের প্রতিবাদ এবং আন্দোলনের আগুন জ্বলবে ততদিন, যতদিন না তাঁরা সুবিচার পান। আপাতত, রাজ্য সরকারের প্রতিক্রিয়া ও পরবর্তী পদক্ষেপের দিকেই তাকিয়ে গোটা রাজ্য।