
ওঙ্কার ডেস্ক : গত ৬ জানুয়ারি ডিমা হাসাওয়ের উমরাংসোর ৩১০ ফুট গভীর পরিত্যক্ত খনিতে কয়লার খোঁজে নেমেছিলেন ৯ জন শ্রমিক। আচমকাই জল ঢোকার কারণে আটকে পড়েন তাঁরা। প্রায় ৪৪ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর অবশেষে উদ্ধার হল নিখোঁজ পাঁচ শ্রমিকের পচাগলা মৃতদেহ। খনিতে আটকে পড়া ন’জনের মধ্যে চার জনের দেহ আগেই উদ্ধার হয়েছিল। এত দিনে পাওয়া গেল বাকিদের দেহও। ওই ৯ জন শ্রমিকের মধ্যে একজন শ্রমিক ছিলেন জলপাইগুড়ির বাসিন্দা।

সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, দুর্ঘটার ঠিক পরেই শুরু হয় উদ্ধারের কাজ। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন নৌবাহিনীর প্রশিক্ষিত ডুবুরি দল। ক্রমাগত তল্লাশির পর ৮ জানুয়ারি তাঁদের মধ্যে গঙ্গাবাহাদুর শ্রেষ্ঠা নামক এক শ্রমিকের দেহ উদ্ধার হয়। তার তিন দিন পর উদ্ধার হয় আরও তিনটি দেহ। তাঁদের নাম লিগেন মগর, খুশি মোহন রাই এবং শরৎ গোয়ারি। লিগেন ডিমা হাসাওয়ের কালামাটির, খুশি কোকড়াঝার জেলার ফকিরগ্রাম এবং শরৎ শোণিতপুরের থাইলাপারার বাসিন্দা ছিলেন।

অসম সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “এত দিনে কয়লা খনিতে আটকে থাকা সব শ্রমিকের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। নিহতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে অসম সরকারের পক্ষ থেকে। আগেই নিহত চার শ্রমিকের পরিবারের হাতে ওই টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে। বাকিদের পরিবারকে দেওয়া হয়েছে ছ’লক্ষ টাকা করে। তবে এখন ওই শ্রমিকদের দেহ উদ্ধার হওয়ায় তাঁরা আরও চার লক্ষ টাকা করে পাবেন”।
দুর্ঘটনার পর জানা যায় নিষিদ্ধ ‘র্যা ট হোল মাইনিং’ পদ্ধতিতে খননের কাজ করা হত খনিটিতে। ডিমা হাসাওয়ের ওই খনিটি অবৈধ বলেও অভিযোগ ওঠে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, “অবৈধ নয়, এটি পরিত্যক্ত খনি। ১২ বছর ধরে খনিটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। তিন বছর আগে পর্যন্ত সেটি ছিল অসম খনিজ উন্নয়ন পর্ষদের অধীনে। খনিটি প্রায় ৩১০ ফুট গভীর ছিল। তা ছাড়া, মূল পথটি ভিতরে গিয়ে চারটি ছোট ছোট সুড়ঙ্গে ভাগ হয়ে গিয়েছিল, তার আবার বেশ কিছু শাখা-প্রশাখা ছিল। উদ্ধারকারী দলগুলির কাছে খনির কোনও নকশাও ছিল না। যে কারণে আটকে থাকা শ্রমিকদের খুঁজে বের করা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছিল ”।