
Ukrainian servicemen fire with a tank towards Russian troops near a front line, amid Russia's attack on Ukraine, in Kharkiv region, Ukraine July 6, 2023. REUTERS/Vyacheslav Madiyevskyy
বিপ্লব দাশ : কোনো কাজের প্রতি যদি কারুর সদিচ্ছা না থাকে তাহলে তা হয়তো একটা দৃশ্যায়ন হয়, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। অর্থাৎ মুখের বুলি দিয়ে নয়, কাজ করতে হয় তাগিদ দিয়ে। রাজ্য বাজেটের পর অমিত মিত্রকে পাশে বসিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের জিডিপি নিয়ে বড়াই করেছিলেন। বলতে চেয়েছিলেন, অঢেল দেনা ও কেন্দ্রের বঞ্চনা সত্ত্বেও তাঁরা এ রাজ্যে উন্নয়নে কতটা এগিয়ে। কিন্তু এই উন্নয়নের মাপকাঠি কি ?
আমরা জানি, এর সারাৎসারে আছে- শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিকাঠামো এবং কর্মসংস্থান। খোলাচোখে তাকালে এর উত্তর কী অস্পষ্ট ! সময়ের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া এবং তুলনামূলক উন্নতি এক নয়। আমরা যদি রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কথা বলি তাহলে কি সরকারি ক্ষেত্রকে বাদ দিয়ে তুলনা করবো ? মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের একটি নজিরবিহীন পর্যবেক্ষণ আমাদের বাস্তব চিত্রের দিকে নজর ফেরাতে বাধ্য করছে। একটি সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত মামলায় শুনানির ফাঁকে তিনি একটা প্রশ্ন তুলেছেন। বলেছেন, “কেন মানুষকে করমণ্ডল এক্সপ্রেস ধরতে হবে”।
বুঝতে অসুবিধা হয় না এই কথার মধ্য দিয়ে কী ইঙ্গিত করেছেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবগণম। এরসঙ্গে তিনি একটি তথ্য দিয়েছেন, ১৯৭৬ সালেও হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা যা ছিল, ২০২৫ সালে এসে স্বাস্থ্যসচিব সেই সংখ্যার কথাই জানাচ্ছেন। এটা যে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে কতটা লজ্জাকর তা নাই বা বলা হল। এর অভিজ্ঞতা জড়িয়ে আছে গড় বাঙালির হাড়ে হাড়ে। পরিষেবা, বিশ্বাস, দক্ষতা যতটা না তলানিতে তার চেয়ে বহু গুন উচ্চতায় চলছে অযোগ্যতা, অর্থ পিপাসা, ভাঁওতাবাজি, দালালির পরিসরটাও কম নয়। প্রবীন চিকিৎকরা তাই আক্ষেপ করেন, তাঁরা অসুস্থ হলে কার কাছে যাবেন। চিকিৎসার নাম মাত্র পরিষেবা না দিয়ে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা বেসরকারি নার্সিং হোমগুলি রাতারাতি লাখ লাখ টাকার বিল ধরিয়ে দিতে কুন্ঠাবোধ করে না। কেন এ রাজ্যের মানুষ করমণ্ডল এক্সপ্রেস ধরেন তা নিশ্চয়ই আর বলার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু প্রধান বিচারপতি রাজনৈতিক দলগুলিকে যে পাঠ দিয়েছেন তার মধ্যেই কী আসল ভূত ! তিনি বলেছেন, “আপনারা ভোট নিয়ে চিন্তিত, ভোটার দিয়ে নয়”। স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন “ভক্তি ছাড়া রথ টানা যায় না”।