
ওঙ্কার ডেস্ক: অবশেষে বন্দি জিনাত। দিন সাতেকের লুকোচুরি শেষে রবিবার দুপুরে বাঁকুড়ার জঙ্গলে ধরা পড়ল জিনাত। তাকে কাবু করতে শনিবার থেকে তাকে লক্ষ্য করে বারবার ঘুমপাড়ানি গুলি চালায় বন দফতর। কিন্তু কিছুতেই বাগে আনা যায়নি তাকে। শনিবার রাতভর জিনাতকে খাঁচাবন্দি করার চেষ্টা করেন বনকর্মীরা। বন দফতর সূত্রে খবর, রবিবার বিকেল ৪টে নাগাদ ফের জিনাতকে লক্ষ্য করে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোঁড়েন বনকর্মীরা। সেই গুলি লাগে ওড়িশা থেকে আসা বাঘিনির গায়ে। তাতেই কাবু হয় সে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ভোরের দিকে বাঘিনির গর্জন শুনতে পেয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। এলাকায় তার পায়ের ছাপও দেখা যায়। তারপরেই বন দফতরে খবর দেয় গ্রামবাসীরা। বাঘিনির গলায় থাকা রেডিয়ো কলার সিগন্যাল ট্র্যাক করে পৌঁছে যান বনকর্মীরাও। তাঁরা জানতে পারেন, গ্রামের অদূরেই মুকুটমণিপুর জলাধার লাগোয়া ছোট জঙ্গলে রয়েছে জিনাত। এরপরেই দ্রুত গোটা জঙ্গল ঘিরে ফেলা হয় নাইলন দড়ি দিয়ে। গ্রামবাসীদের উপর বাঘিনির হামলা ঠেকাতে গ্রামের রাস্তাও জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। জঙ্গলে একাধিক খাঁচা পাতার পাশাপাশি দুটি মহিষকেও টোপ হিসাবে রাখা হয়েছিল। শেষমেশ ফের ঘুমপাড়ানি গুলিতেই কাবু হয় সে।
২৪ নভেম্বর সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ছাড়া হয়েছিল জিনতকে। তারপরেই ঝাড়খণ্ডের দিকে হাঁটা দেয় জিনাত। কয়েকদিন ঝাড়খণ্ডে ঘুরে চাকুলিয়া রেঞ্জের রাজাবাসার জঙ্গল পেরিয়ে চিয়াবান্ধি এলাকা থেকে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি থানার অন্তর্গত কাটুচুয়া জঙ্গলে ঢুকে পড়ে সে। তারপর ঝাড়গ্রাম থেকে বাঘিনি পৌঁছে যায় পুরুলিয়ার জঙ্গলে। শনিবার সকালে তার আস্তানা বদলে সে পৌঁছয় গোঁসাইডিহি গ্রামে। অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পরেই ঘুমপাড়ানি গুলি ছুঁড়ে বাঘিনিকে কাবু করার বন্দোবস্ত শুরু করে বন দফতর। গুলি ছোঁড়াও হয়েছিল। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। আবার জঙ্গলেই কোথাও লুকিয়ে পড়েছিল বাঘিনি। আজ রবিবার নতুন করে তার খবর পাওয়ার পর গোটা জঙ্গল ঘিরে ফেলে জায়গায় জায়গায় আগুন লাগিয়ে জ়িনাতকে খাঁচাবন্দি করার কৌশল নেওয়া হয়। সেই কৌশলেই সাফল্য আসে। অবশেষে বনকর্মীদের জালে ধরা পড়ে বাঘিনি জিনাত।