
ওঙ্কার ডেস্ক: ইংরাজি নববর্ষে বঙ্গ রাজনীতি সাক্ষী থাকল একটি তাৎপর্যপূর্ণ রাজনৈতিক সমীকরণের। অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর আহ্বানে চিঠি লিখে আগামীদিনে একসঙ্গে সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনে সামিল হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি বাঁচাও মঞ্চের নেতৃত্ব। এদিন দেশনায়ক নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এবং ভারত কেশরী ডক্টর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বাসভবনে ওঁদের আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদান করে সংকল্প দিবস পালন করল হিন্দু মহাসভা এবং বিজেপি বাঁচাও মঞ্চের নেতৃত্ব। এরপর ওঁরা রাজ্য নির্বাচন কমিশনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এরপর অখিলভারত হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর আবেদনের ভিত্তিতে নির্বাচনী প্রতীক পাওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।
হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতির হাত থেকে পতাকা নিয়েই আগামীদিনে বিজেপি বাঁচাও মঞ্চ হিন্দু মহাসভার নেতৃত্বে সারা বাংলা এবং ভারতজুড়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনে সামিল হওয়ার সংকল্প গ্রহণ করেন। হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামী বলেন, ‘আমরা তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম বা কংগ্রেস কারও বিরোধী নই।বরং গর্বের সঙ্গে সনাতনী জাতীয়তাবাদী আদর্শের পক্ষে।’ প্রসঙ্গত, চন্দ্রচূড় নিজেকে হিন্দু মহাসভার সভাপতি হিসেবে দাবি করেন। তাই নিয়ে বিতর্ক আছে। নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি দিয়ে জানান হয়েছিল, চন্দ্রচৃড় হিন্দু মহাসভার কেউ নন।
চন্দ্রচূড় আরও বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে বহু নিষ্ক্রিয় সদস্য রয়েছেন যারা নিজেদের দলেই উপযুক্ত মর্যাদা পাচ্ছেন না। ওঁদের জন্য হিন্দু মহাসভার হৃদয় ও দরজা দুই আন্তরিকতার সঙ্গে খোলা রয়েছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে আমাদের রাজনৈতিক দলের অবস্থানে খুশি হয়ে বহু আদি বিজেপি এবং সংঘের একনিষ্ঠ কর্মীরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তবে আমাদের দরজা কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের জন্য শুধু নয়, সমস্ত সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের যত সনাতনী জাতীয়তাবাদী রয়েছেন তাঁদের স্বাগত।’ অন্যদিকে, বিজেপি বাঁচাও মঞ্চের কনভেনর দীপক কুমার সরকার বলেন, ‘হিন্দু মহাসভা এমুহূর্তে সনাতনীদের একমাত্র ভরসা, তাই আগামীদিনে হিন্দু মহাসভার নেতৃত্বেই আমরা বৃহত্তর আন্দোলন শুরু করতে চলেছি। বাংলাদেশে এমুহূর্তে সনাতনীদের উপর যেভাবে নৃশংস অত্যাচার হচ্ছে তাতে আমরা অত্যন্ত বিচলিত। রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার এই বিষয়ে পরস্পরকে দোষারোপ করলেও আমাদের কাছে হিন্দু মহাসভার অবস্থান সবচেয়ে সঠিক মনে হয়েছে।আমরা হিন্দু মহাসভার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ এই মঞ্চের আরেক নেতা কার্তিক মাইতি উল্লেখ করেন, একুশের বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী সংঘর্ষের সময় রাজ্য বিজেপির কাছ থেকে কোনও সহযোগিতা না পেয়ে বিজেপি বাঁচাও মঞ্চ গড়া হয়েছিল। কিন্তু এখন হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর নেতৃত্বে আগামী নির্বাচনে হিন্দু মহাসভার হয়েই সামাজিক ও রাজনৈতিক লড়াই চালানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
হিন্দু মহাসভার অফিস সেক্রেটারি অনামিকা মন্ডল বলেন, ‘নতুন বছর আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ-কারণ ২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচন। তাই আমরা বৃহত্তর হিন্দু মহাসভা পরিবার আগামীদিনে চন্দ্রচূড় গোস্বামীর নেতৃত্বে সব রাজনৈতিক দলের দলছুট সদস্যদের প্রকৃত সম্মান দিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে সামিল হতে চলেছি। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, নতুন বছরের শুরুতেই ভারতের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল হিন্দু মহাসভা ও বিজেপি বাঁচাও মঞ্চের সংযুক্তি নিঃসন্দেহে বঙ্গ রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় শুরু করবে।