
সুকান্ত চট্টোপাধ্যায় , কলকাতা : দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে দিলীপ ঘোষের উপস্থিতি এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে বসা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে যখন জল্পনা তুঙ্গে, তখন বিজেপির রাজ্য মহিলা মোর্চার সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্র দিলীপ ঘোষের পক্ষে মুখ খুললেন। জানালেন, “দিলীপদা তৃণমূলে যোগ দেবেন না। দিঘায় যাওয়া তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত— সেখানে রাজনীতি খোঁজা ঠিক নয়।”
বুধবার দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের মঞ্চে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে দেখা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে। রাজনৈতিক শিবিরে শুরু হয়ে যায় গুঞ্জন। তবে কি বিজেপি থেকে তৃণমূলে পা বাড়াচ্ছেন দিলীপ ? সেই জল্পনার আবহেই বিজেপি মহিলা মোর্চার সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্র বলেন, “দিলীপদা সৌজন্যের খাতিরেই গিয়েছিলেন। এ নিয়ে রাজনীতি করা অনুচিত। তিনি হিন্দু ধর্মের বিশ্বাসকে সম্মান জানাতে গিয়েছেন। তা নিয়ে সন্দেহ বা অপপ্রচার করা দুর্ভাগ্যজনক।”
তিনি আরও বলেন, “রাম মন্দির উদ্বোধনে দেশের সব হিন্দুদের ডাকা হয়েছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তখন যাননি। আর আজ যখন দিঘায় জগন্নাথ মন্দির তৈরি হয়েছে, তখন মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতি সহ প্রচারের ঝাঁঝে তা যেন কালচারাল সেন্টারে পরিণত হয়েছে। এই ধর্মস্থানের রাজনীতিকরণই আসল প্রশ্ন।”
ফাল্গুনী পাত্র স্পষ্ট জানান, “চার ধামের মধ্যে পুরী একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাম। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এটিকে ধর্মীয় স্থানের পরিবর্তে একটি সংস্কৃতি কেন্দ্র হিসেবে তুলে ধরছেন। এটি জগন্নাথ ধাম নয়, একটি কালচারাল সেন্টার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হিন্দুদের ধর্মবিশ্বাসের সঙ্গে বারবার ছলনা করছেন— এ রাজ্যের মানুষকে তা বুঝতে হবে।”
তাঁর বক্তব্য, “আমি দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি দিলীপদা কখনোই তৃণমূলে যোগ দেবেন না। ওঁর রাজনৈতিক অবস্থান, মতাদর্শ এবং কাজের ধরন একেবারে আলাদা। সৌজন্যের জন্য তিনি উপস্থিত থাকতে পারেন, তাতে রাজনৈতিক রং খোঁজাটা অন্যায়।”
এই মন্তব্যের মাধ্যমে একদিকে যেমন দিলীপ ঘোষকে ‘বাঁচানোর’ চেষ্টা করলেন ফাল্গুনী, তেমনই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগও আনলেন। প্রশ্ন উঠছে, জগন্নাথ মন্দিরকে ঘিরে হিন্দু ভোট ব্যাঙ্কের জন্যই কি রাজনীতির এই রসায়ন ?
বিধানসভা নির্বাচনের আগে দিলীপ ঘোষের এমন উপস্থিতি ও ফাল্গুনীর এই মন্তব্যকে ঘিরে এখন তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি।