
ওঙ্কার ডেস্ক: “অপারেশন সিঁদুর”-এর পর নানা ভাবে চোখ রাঙাচ্ছে পাকিস্তান। আক্রোশ থেকে যে কোনো ধরণের হামলা চালাতে পারে পাকিস্তান, এই আশঙ্কা থেকে দেশের সীমান্ত-নির্ভর রাজ্যগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে বুধবার দুপুরে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে আপদকালীন বৈঠকে বসলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দুপুর ২টোয় শুরু হয় এই বৈঠক। সীমান্তবর্তী দশটি রাজ্যে- জম্মু ও কাশ্মীর, পঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাত, উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, সিকিম, পশ্চিমবঙ্গ, লাদাখের সঙ্গে বৈঠক চলে। রাজ্যের পুলিশ প্রধান, মুখ্যসচিব, মুখ্যমন্ত্রীরা যোগ দেন এই বৈঠকে। লাদাখ, জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নরও হাজির ছিলেন।
পহেলগামের নির্মম হামলার ১৫ দিনের মাথায় জবাব দিল ভারত। মঙ্গলবার রাতের ‘অপারেশন সিঁদুরে’ কার্যত বিধ্বস্ত পাকিস্তান। সরকারি সূত্রের খবর, এই অপারেশনে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে একযোগে চালানো নিশানা-হানায় অন্তত ৭০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৬০ ছাড়িয়েছে।
২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে ২৬ জন নিরীহ পর্যটককে গুলি করে হত্যা করেছিল জঙ্গিরা। তদন্তে উঠে আসে, হামলাকারীদের মধ্যে দু’জন ছিল পাকিস্তানের নাগরিক। পহেলগামের সেই নৃশংস ঘটনার পর দেশজুড়ে ফুঁসে ওঠে জনমত। ঠিক তার ১৫ দিন পর, মঙ্গলবার রাতে জবাব দিল ভারত।
সরকারি বিবৃতি অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে সন্ত্রাসবাদী হামলার ছক কষছিল জঙ্গিরা। বারবার সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িতও হয়েছে ভারতের মাটিতে। মঙ্গলবারের অভিযানে সেই জঙ্গি ঘাঁটিগুলিকে নিশানা করেই হামলা চালানো হয়েছে।
এক উচ্চপদস্থ প্রতিরক্ষা কর্তা জানিয়েছেন, ‘‘মোট ৯টি জায়গায় নির্ভুল নিশানা-হানায় ধ্বংস করা হয়েছে জঙ্গি ঘাঁটি। সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ও সীমিত পরিসরে এই অভিযান চালানো হয়েছে।’’
সরকারের তরফে আরও জানানো হয়েছে, ‘‘এই হামলা নিপুণ লক্ষ্যভিত্তিক। জঙ্গি শিবির ছাড়া অন্য কোনও সামরিক বা বেসামরিক পরিকাঠামোকে আঘাত করা হয়নি। পাকিস্তানের কোনও সামরিক ঘাঁটি এই হামলার টার্গেট ছিল না। ভারত যথেষ্ট সংযম দেখিয়ে কৌশল নির্ধারণ করেছে।’’
অন্য দিকে, পাকিস্তানের হুমকি ঘিরে দেশের নিরাপত্তা নিয়ে ফের উদ্বেগ বেড়েছে। তাইই, বুধবার সীমান্ত রাজ্যগুলিকে নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উচ্চপর্যায়ের বৈঠক। রাজ্যগুলি হল— ঝাড়খণ্ড, পাঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাট, উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, সিকিম, পশ্চিমবঙ্গ এবং লাদাখ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে সীমান্ত-রক্ষার ব্যবস্থা আরও আঁটোসাঁটো করতে হবে। সম্ভাব্য জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঠেকাতে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানো জরুরি।’’
এই মুহূর্তে দেশের নিরাপত্তা বলয়ের উপরই চোখ গোটা প্রশাসনের। আগামী দিনে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা নির্ধারণ করবে এই অপারেশনের প্রভাব ও পাকিস্তানের পরবর্তী পদক্ষেপ।