
স্পোর্টস ডেস্ক : গত এএফসি এশিয়ান কাপের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে উন্নত ফুটবলার ও দলনেতা হিসেবে গড়ে তুলতে পারবেন তারকা ফরোয়ার্ড লালিয়ানজুয়ালা ছাঙতে ? সে রকমই মনে করেন তিনি।
এশীয় স্তরের সেই টুর্নামেন্টে যে শিক্ষা পেয়েছিলেন ভারতীয় ফুটবলাররা, ছাঙতের ধারণা, এ বার সেই শিক্ষা কাজে লাগিয়েই ভাল পারফরম্যান্স দেখাতে পারবেন তিনি এবং তাঁর সতীর্থরা এবং ২০২৭-এর এশিয়ান কাপের মূলপর্বে খেলার যোগ্যতাও অর্জন করতে পারবেন।
গতবারের এশিয়ান কাপেই প্রথমবার এশীয় মঞ্চে দেখা যায় ছাঙতেকে। কিন্তু মূলপর্বে ভারতীয় দল একটিও জয় অর্জন করতে পারেনি। তবে সেই টুর্নামেন্ট থেকে অনেক কিছু শিখেছিলেন বলে জানিয়েছেন ছাঙতে। সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের ওয়েবসাইটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি সে কথা স্বীকার করেন।
বলেন, “আমাদের গ্রুপে এশিয়ার অন্যতম সেরা দলগুলি ছিল (অস্ট্রেলিয়া, উজবেকিস্তান ও সিরিয়া)। তবে আমাদের অভিজ্ঞতা ভাল হয়নি। তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমি অনেক কিছু শিখেছিলাম। বিশেষত প্রয়োজনের সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে। আমার মনে হয়, সেই ব্যর্থতা আমাদের প্রত্যেককেই আরও ভাল ফুটবলার ও দৃঢ়চরিত্রের মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করেছে। এখন আমরা পরবর্তী চ্যালেঞ্জের দিকে তাকিয়ে রয়েছি। এখন আমাদের একমাত্র লক্ষ্য, ফের এশিয়ান কাপে মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করা”।
এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে ভারতের গ্রুপে রয়েছে হংকং, সিঙ্গাপুর ও বাংলাদেশ। বাছাই পর্বে মোট ২৪টি দলকে ছ’টি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি গ্রুপের এক নম্বর দলগুলি মূলপর্বে উঠবে, যেখানে ইতিমধ্যেই ১৮টি দল জায়গা পাকা করে ফেলেছে। ভারত রয়েছে ‘সি’ গ্রুপে।
এই গ্রুপে ভারতই (১২৬) ফিফা ক্রমতালিকায় সবার ওপরে থাকা দল। হংকং রয়েছে ১৫৫ নম্বরে, সিঙ্গাপুর ১৬০-এ ও বাংলাদেশ ১৮৫। তবে প্রথম ম্যাচেই ভারত হোঁচট খেয়েছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করে। গ্রুপে থাকা অপর দুই দল হংকং ও সিঙ্গাপুর-ও তাদের ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করে। ফলে গ্রুপের প্রতিটি দলই একই জায়গায় রয়েছে। ভারতের স্বস্তির কারণ বলতে শুধুমাত্র এটুকুই। তবে হংকংয়ের বিরুদ্ধে আসন্ন ম্যাচে ভারতকে জেতার সংকল্প নিয়েই নামতে হবে।
আগামী ১০ জুন হংকংয়ের কাওলুন সিটিতে এএফসি এশিয়ান কাপ ২০২৭ বাছাই পর্বের ম্যাচে তারা হংকংয়ের মুখোমুখি হবে, যা ভারতের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হতে চলেছে। এই ম্যাচের প্রস্তুতির অঙ্গ হিসেবে ৪ জুন তারা থাইল্যান্ডের পাতুম থানিতে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে সেই দেশের জাতীয় দলের বিরুদ্ধে। কলকাতায় এই দুই ম্যাচের প্রস্তুতি শিবির হয় ১৯ মে থেকে। সেই শিবির চলাকালীনই কথাগুলি বলেন ছাঙতে।
২৭ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডই এই ভারতীয় দলের অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের মধ্যে অন্যতম। এ বার তিনি নিজের সেরাটা দিতে চান। বলেন, “যে কোনও ফুটবলারের কাছেই জাতীয় দলের হয়ে খেলা সবচেয়ে বড় সাফল্য। যখন জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মাঠে নামার সুযোগ পাই আমরা, তখন সর্বস্ব উজাড় করে দেওয়াই উচিত। জাতীয় শিবিরে এসে বরাবরই সেই চেষ্টা করি আমি। খুব ভাল লাগে। তবে কোনও কিছুই নিশ্চিত মনে করি না। প্রতি দিন দেশের জন্য নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি”।
আসন্ন ম্যাচগুলিতে ভারতীয় দলের আক্রমণ বিভাগের তারকাদের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ গোল করা, যা তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে করতে পারেনি। গত এশিয়ান কাপের মূলপর্বেও ভারত কোনও গোল পায়নি। এই সমস্যাই দূর করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে মাঠে নামতে হবে তাদের। এই চাপকেই প্রেরণায় পরিণত করতে চান তিনি।
এই প্রসঙ্গে মণিপুরের ফুটবলার বলেন, “জাতীয় দলের হয়ে খেলতে নামলে এবং ভাল খেললে প্রত্যাশা বাড়বেই। সমর্থক, কোচ, সতীর্থদের প্রত্যাশা ক্রমশ বাড়ে। এটা আমার ভালই লাগে। এর ফলে আরও পরিশ্রম করার ইচ্ছা জাগে। প্রতিদিন নিজেকে সেই ভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করে, যাতে তরুণ ফুটবলারদের সামনে উদাহরণ হয়ে উঠতে পারি”।