
বিপ্লব দাশ : পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত মামলায় সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট এক গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশ অনুযায়ী, রাজ্য সরকারকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে কর্মীদের বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দিতে বলা হয়েছে। এই রায় রাজ্য সরকারি কর্মীমহলে আশার আলো জাগালেও, রাজ্য সরকারের আর্থিক দায়বদ্ধতা এবং সম্ভাব্য আর্থিক সঙ্কট নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠেছে। রাজস্বের যা হাল, তাতে কি ডিএ মেটাতে ১০ হাজার কোটি টাকার বাড়তি চাপ রাজ্য সরকার নিতে পারবে ? বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মীরা ১৮ শতাংশ হারে ডিএ পাচ্ছেন। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা পাচ্ছেন ৫৫ শতাংশ হারে। এই বিশাল ব্যবধান দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষের কারণ। অথচ এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কোথা থেকে আসবে, তা নিয়ে রাজ্য সরকারের অন্দরমহলে ইতিমধ্যেই চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। তা জোগাড় করতে গিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক ও জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের বরাদ্দে কাটছাঁট করা ছাড়া আর কোনো উপায় দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা।
আগমী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন, জনকল্যাণমূলক প্রকল্পে কোপ পড়লে তার রাজনৈতিক প্রভাবও পড়তে পারে। অথচ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, রাজ্য সরকারকে তার কর্মীদের বকেয়া ডিএ-র ন্যূনতম ২৫ শতাংশ অবিলম্বে মিটিয়ে দিতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন এই আদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দাখিল করার কোনও সংস্থান নেই। বরং এই নির্দেশটি সমস্ত রাজ্য সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক, বিধিবদ্ধ সংস্থার কর্মী, পঞ্চায়েত কর্মী, পুরসভা ও পৌরনিগমের কর্মী, অবসরপ্রাপ্ত কর্মী এবং পারিবারিক পেনশনভোগীদের জন্য প্রযোজ্য হবে। আদালত স্পষ্ট করেছে যে, কোনও প্রকার শ্রেণিবিভাগ না করে সকলকেই এই সুবিধার আওতায় আনতে হবে। এদিকে এই নির্দেশ অন্তর্বর্তীকালীন হলেও, তা কর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণের পথে কিছুটা হলেও আশার আলো দেখাচ্ছে। আগামী দিনে এই মামলার চূড়ান্ত রায় কী হয়, সেদিকেই তাকিয়ে থাকবে রাজ্যের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মী ও পেনশনভোগী।