
ওঙ্কার ডেস্ক : কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ড ঘিরে ফের সামনে এল মুম্বই হামলার মূল চক্রী হাফিজ় সইদের নাম। তদন্তের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্ন দানা বাঁধছে— ২৬/১১-র মস্তিষ্ক কি নতুন করে সক্রিয় হয়েছেন উপত্যকার অশান্তি ছড়াতে?
এই প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি। তবে তার আগেই সতর্ক পাকিস্তান। লাহৌরের জ়োহর টাউনে হাফিজ়ের বাসভবন ঘিরে ৪ কিলোমিটারের ব্যাসার্ধে বসানো হয়েছে উচ্চ রেজ়োলিউশনের সিসি ক্যামেরা। মোতায়েন করা হয়েছে সশস্ত্র পুলিশ এবং আধাসেনা। পাশাপাশি, নজরে রাখা হচ্ছে এলাকা— আকাশপথে ড্রোনের সাহায্যে। পাক সেনা ও গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই যে কোনও সম্ভাব্য হামলা রুখতে কোমর বেঁধে নেমেছে।
প্রসঙ্গত, পহেলগাঁওয়ের ঘটনায় প্রথমে দায় স্বীকার করেছিল লশকর-এর ‘ছায়া সংগঠন’ দ্য রেজ়িস্ট্যান্স ফ্রন্ট (TRF)। পরে অবশ্য তারা তা অস্বীকার করে। ভারতীয় গোয়েন্দা মহলের মতে, দায় স্বীকার ও প্রত্যাখ্যানের এই খেলা আসলে জঙ্গি সংগঠনগুলির পুরনো কৌশল। মূল সংগঠনকে আড়ালে রেখে মাঠে নামে ছায়া সংগঠনগুলি।
তবে এই ঘটনায় হাফিজ়ের জড়িয়ে থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না গোয়েন্দারা। তাঁদের মতে, কাশ্মীরের মাটিতে সক্রিয় ছায়া সংগঠনগুলিকে আদর্শ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা জোগাতে পিছপা হন না লশকর প্রধান। ভারতীয় সূত্রে খবর, এই কাজে তাঁকে সাহায্য করে তাঁর ঘনিষ্ঠ সঙ্গী তথা সংগঠনের ‘ডেপুটি’ সইফুল্লা কাসুরি। তবে কাসুরির হদিশ পাওয়া যায়নি দীর্ঘদিন।
একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, পাকিস্তানের মাটিতে সম্প্রতি একের পর এক ভারত-বিরোধী জঙ্গি নেতার রহস্যজনক মৃত্যু বা গুপ্তহত্যা নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সেই কারণেই হাফিজ়কে ঘিরে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না পাক সেনা।
২০০৮-এর মুম্বই হামলার পর একাধিক বার নজরবন্দি হয়েছেন হাফিজ়। বিশ্বজুড়ে ‘সন্ত্রাসবাদী’ হিসেবে চিহ্নিত এই লশকর প্রধান এখনও পাক মাটিতে নিশ্চিন্ত জীবনযাপন করছেন— এমনই অভিযোগ ভারতের। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে তাঁর গতিবিধি ঘিরে যে সতর্কতা, তাতে প্রমাণ মেলে— লাহৌরের প্রাচীরের আড়ালেও আতঙ্কের ছায়া ঘনিয়েছে।