
বিপ্লব দাশ : শত্রুপক্ষের বিরোধের মধ্যে প্রতিপক্ষের অনেকটাই স্বস্তি থাকে। কারণ এতে অযাচিত ভাবে অ্যাডভান্টেজ পেয়ে যায় প্রতিপক্ষ। দিল্লির নির্বাচনে আমরা এমনটাই দেখেছিলাম। যার ফলে আপের চেয়ে মাত্র দু শতাংশ বেশি ভোট পেয়ে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পেয়ে যায় বিজেপি। এখানে বিরোধটা ছিল ইন্ডিয়া জোটে। জোটের কলহ না থাকলে ২৭ বছর পর বিজেপি আদৌ দিল্লিতে ক্ষমতা দখল করতে পারতো কিনা তা নিয়ে সংশয় থেকে যায়। অঙ্ক বলে, পারতো না। কারণ কংগ্রেসের ৭ শতাংশ ভোট যুক্ত হলে বিজেপি অনেকটাই পিছনে চেলে যায়। দেখা গিয়েছিল, তাতে আপকে অন্তত ১৫-১৭টা আসন খোয়াতে হত না। এ রাজ্যেও বিজেপি তেমন একটা আশা করে থাকতে পারে যখন নেতাজি ইন্ডোরে মমতার দলীয় সমাবেশে দেখা গেল ভুতুড়ে ভোটার নিরীক্ষণ কমিটিতে অভিষেক দ্বিতীয় স্থানে। এবং সেই কমিটির প্রথম বৈঠকে অনুপস্থিত অভিষেক।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাজ্য সভাপতির সঙ্গে সর্বভারতীয় সম্পাদকের যে সহমত গড়ে উঠল তাতে বঙ্গ বিজেপির কপালে খানিক ভাঁজ পড়া স্বাভাবিক। কারণ ইতিমধ্যে বিরোধীদের কাছে এটা পরিষ্কার যে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ বিরোধের কোনো লাভ তারা পাচ্ছে না। ২৬শের ভোটে সংগঠনের রাশ এখন সর্বসম্মতিক্রমে অভিষেকের হাতে। বাংলাও দেখল, শাসক দলের এই সর্বসম্মত চেহারা। যা এতদিন অদেখাই ছিল বাংলার রাজনীতিতে। অভিষেককে অপরিণত ভেবে দলের প্রবীণ নেতারা বিভিন্ন ইস্যুতে দিদির কান ভাঙাবে এটাই ছিল পরিচিত ছবিহ। যার পিছনে ছিল কিছুটা ইগো আর ছিল দলের মধ্যে প্রযুক্তি নির্ভরতা নিয়ে বিরোধ। পুরোনো দিনের নেতাদের কাছে মাটির গন্ধই রাজনীতির প্রকৃত স্পন্দন বলে চলে আসছিল, সেখানে প্রযুক্তি নির্ভরতা তাঁদের কাছে অস্বস্তিকর হবে তা বলাইবাহুল্য। কিন্তু অভিষেক এই সময়ের নেতা, তাঁর ভাবনায় অধুনা গতি প্রকৃতি থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আসল যুদ্ধ ছিল প্রাচীন আর অর্বাচীনের মধ্যে। যা এখন মিলেমিশে কার্যত যুগোপযোগী হয়ে উঠছে। এক্ষেত্রে বক্সীদার কথাই একশোয় একশ, ‘অভিষেক ঠিকই তো বলছে’।