
স্পোর্টস ডেস্ক : অবিশ্বাস্য ম্যাচ। রুদ্ধশ্বাস জয়। পুরো নাটকীয়। যেকোনও থ্রিলারকে হার মানাবে। জোড়া সুপার ওভার। ২০ ওভারের শেষে ম্যাচ টাই হওয়ার পর সুপার ওভারেও টাই। শেষপর্যন্ত দ্বিতীয় সুপার ওভারে ম্যাচের নিষ্পত্তি হল। জয়ের জন্য আফগানিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১২ রান। পুরো ছয় বল খেলতে পারেনি ভারত। এক বল বাকি থাকতেই জোড়া উইকেট হারায়। বিরাট কোহলি, শিবম দুবে থাকতে কেন মাত্র ১ বল খেলে শূন্যতে আউট হওয়া সঞ্জু স্যামসনকে সুপার ওভারে ব্যাট করতে পাঠানো হল বোঝা গেল না। কিন্তু আফগানদের আটকে রাখলেন রবি বিষ্ণোই। মাত্র এক রান দিয়ে তিন বলে দুই উইকেট তুলে নেন। তবে বুধ রাতে বেঙ্গালুরুর চিন্নস্বামী স্টেডিয়ামে গর্জে উঠল একটাই নাম, রোহিত শর্মা।১২১ রানে অপরাজিত। সুপার ওভারে জোড়া ছক্কা মারেন। দ্বিতীয় সুপার ওভারের শুরুও করেন ছক্কা হাঁকিয়ে। প্রথম সুপার ওভারে জয়ের জন্য ১৭ রান প্রয়োজন ছিল ভারতের। শেষ বলে মাত্র এক রান নিয়ে টাই করেন যশস্বী। প্রথমে ব্যাট করে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ২১২ রান করে ভারত। শেষ বলে ৬ উইকেট হারিয়ে ২১২ রানে পৌঁছে যায় আফগানিস্তান। দীর্ঘদিন পর ভারতের ম্যাচ টাই হয়। সুপার ওভারে খেলা গড়ায়। প্রথম বলে গুলবাদিনের রানআউট ভারতকে সুবিধা করে দেয়। কিন্তু ফায়দা তুলতে পারেনি। তবে সুপার ওভারের নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। প্রথম সুপার ওভারের শেষ বলের আগে নিজেকে রিটায়ার্ড আউট করলেও দ্বিতীয় সুপার ওভারে ব্যাট করতে নামেন রোহিত।২১২ রান তাড়া করতে নেমে আফগানিস্তান যে লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে কেউ ভাবতে পারেনি। শেষ বলে ২ রান নিয়ে ম্যাচ সুপার ওভারে নিয়ে যান গুলবাদিন নায়েব। ২৩ বলে ৫৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। ইনিংসে ছিল ৪টি ছয় এবং চার। ১৬ বলে নবির দ্রুত ৩৪ রান আফগানদের লক্ষ্যে পৌঁছতে সাহায্য করে। পাহাড়প্রমাণ রান তাড়া করতে নেমে প্রথম উইকেটে ৯৩ রান যোগ করেন রহমানুল্লা গুরবাজ এবং ইব্রাহিম জাদরান। দু”জনেই ৫০ রান করে আউট হন। তারমধ্যে বেশি মারমুখী ছিলেন আফগানিস্তানের উইকেটকিপার ব্যাটার। ওয়াশিংটন সুন্দর ছাড়া বাকি বোলাররা সুবিধা করতে পারেনি। প্রথমে ব্যাট করে দুরন্ত পারফরম্যান্স রোহিত শর্মার। প্রথম দু”ম্যাচে শূন্যতে ফেরার পর তৃতীয় ম্যাচে একশো। ছয়, চারের বন্যা বইয়ে দেন। আন্তর্জাতিক টি-২০ তে রোহিতের সর্বোচ্চ রান। ৬৯ বলে ১২১ রান করেন। ঝলমলে ইনিংসে ছিল ৮টি ছয়, ১১টি চার। অন্য প্রান্ত দুরন্ত রিঙ্কু সিংও। বিপদে অধিনায়কের সঙ্গে মিলে দলকে টেনে তোলেন। ৬টি ছয়, ২টি চারের সাহায্যে ৩৯ বলে ৬৯ রান করেন। মাত্র ২২ রানে ৪ উইকেট হারায় ভারত। শূন্যতে ফেরেন বিরাট কোহলি, সঞ্জু স্যামসন। ছন্দে থাকা যশস্বী জয়েসওয়াল, শিবম দুবেও রান পায়নি। তবে পাওয়ার প্লের মধ্যে ৪ উইকেট হারানোর পরও যে ভারত দুশোর গণ্ডি পেরবে ভাবা যায়নি। পুরো কৃতিত্ব প্রাপ্য রোহিতের। যদিও ম্যাচ শেষে রিঙ্কু সিংয়ের প্রশংসা করে রোহিত বলেন,১২১ রানের ইনিংস করে রোহিত শর্মা ম্য়াচের সেরা হন। রোহিত ওপেন করতে নামেন এবং তারপর অপর প্রান্ত থেকে একেরপর এক উইকেট পড়তে থাকে। সেই সময় দলের হাল ধরেন রিঙ্কু। একদিন থেকে রোহিত চালিয়ে খেলতে থাকেন আর অন্যদিক থেকে রিঙ্কু দলকে ধরে রাখেন। ম্যাচ সেরার পুরস্কার নিতে গিয়ে রোহিতের গলায় শোনা গেল রিঙ্কুর প্রশংসা।
ম্য়াচর শেষে রোহিত বলেন, ‘আমি মনে করতে পারছি না শেষ কবে এইরকমের একটা ম্যাচ হয়েছিল। আমার মনে করছে একটা আইপিএল ম্য়াচে আমি তিনবার ব্যাট করতে নেমেছিলাম। পার্টনারশিপ তৈরি করাটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং আমি ও রিঙ্কু নিজেদের সঙ্গে কথা বলেছি যে ম্য়াচের রাশটা হাতছাড়া করলে হবে না। চাপ ছিল, তবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল লম্বা সময় ধরে ব্যাট করা।’রিঙ্কুর প্রশংসা করে রোহিত শর্মা বলেন, ‘ও শেষ যতগুলো সিরিজ খেলেছে, ও দেখিয়েছে যে ব্যাট হাতে কী করতে পারে। খুব শান্ত মাথার ছেলে এবং ও নিজের শক্তি অনুযায়ী কাজ করতে পারে। ও যেই বয়সের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সেই বয়সে ওর থেকে এটাই আশা করা হয়।। এইরকম প্লেয়ারের পিছনে থাকা দরকার এবং আমরা দেখেছি ও আইপিএলে কীরকম ব্যাটিং করে। সেটাই ও ভারতীয় জার্সিতেও ধরে রেখেছে।’