
নিজস্ব সংবাদদাতা : কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি (KIIT)-র মহিলা হস্টেল থেকে ফের এক নেপালি ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল। বছর কুড়ির ওই তরুণী সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হন বৃহস্পতিবার সকালে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতা ওড়িশার ভুবনেশ্বরের এই বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে বি.টেক পাঠরতা ছিলেন।
ভুবনেশ্বরের পুলিশ কমিশনার জানান, “এক নেপালি ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয়েছে কেআইআইটি-র মহিলা হস্টেলের একটি ঘরে। প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে।” হস্টেলের ১১১ নম্বর ঘর থেকেই মৃতদেহটি উদ্ধার হয়েছে বলে জানান এক সিনিয়র অফিসার।
এই ঘটনা আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে কারণ মাত্র আড়াই মাস আগেই একই প্রতিষ্ঠান থেকে অপর এক নেপালি ছাত্রী, প্রকৃতি লামসাল, আত্মহত্যা করেছিলেন। সেই ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। প্রথম মৃত্যুর ঘটনায় উঠে এসেছিল ব্ল্যাকমেল ও গোপনে তোলা ব্যক্তিগত ছবি ভাইরালের অভিযোগ। অভিযুক্ত হিসেবে ধরা পড়েছিল লখনউয়ের এক সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের ছেলে। ঘটনার জেরে কূটনৈতিক স্তরেও উত্তেজনা ছড়ায়, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নেপালি পড়ুয়াদের হস্টেল খালি করার নির্দেশ দেয়—যার পরেই শুরু হয় প্রবল প্রতিবাদ।
সেই বিতর্কের আবহেই ফের একই ধরনের মৃত্যুতে প্রশ্নের মুখে কেআইআইটি কর্তৃপক্ষ। তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আত্মহত্যার কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত শুরু হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পরপর একই জাতিগোষ্ঠীর দুই ছাত্রীর এমন পরিণতি মানসিক স্বাস্থ্য এবং হস্টেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। একটি আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের ঘটনা পড়ুয়াদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, এমনটাই মত ছাত্রসমাজের একাংশের।
উল্লেখ্য, KIIT দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির বহু ছাত্রছাত্রীর গন্তব্যস্থল হয়ে উঠেছে। এমন প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা ও সহমর্মিতার পরিবেশ নিয়ে যে প্রশ্ন উঠছে, তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন শিক্ষামহল।