
অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় :সব আশা প্রত্যাশা পুড়ে ছাই। সৌরভের দলের পুনরাবৃত্তি রোহিতের ভারতের। ২০০৩ বিশ্বকাপ ফাইনালের বদলা নেওয়া হল না। ভারতের মাটিতে ভারতের ১ লাখের উপর ক্রিকেট অনুরাগীদের গর্জন সবরমতী নদীতে ফেলে দিয়ে ষষ্ঠবার ওয়ান ডে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। ভারতকে হারালো ৭ উইকেটে।আবারও তারা দেখালো বিশ্বকাপ এলে তাঁদের আসল রূপ দেখা যায়। এদিন যদিও ব্যাটিং করতে চেয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। টস হারলেও প্যাট কামিন্স ভারতকে ব্যাটিং করতে পাঠান। পিচ না বুঝে রোহিত সহ ভারতীয় ব্যাটাররা ভুলভাল শট খেললেন তার গাফিলতি দিতে হল।৫০ ওভারের ম্যাচে ২৪১ রানের টার্গেট অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের কাছে বড় কিছু নয়। ৫ বারের চ্যাম্পিয়নদের ব্যাটিংয়ের গভীরতা রীতিমতো ঈর্ষণীয়। তবে এবারের ওডিআই বিশ্বকাপেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২২৯ রান করার পর ১০০ রানে জয় পেয়েছিল ভারত। সেই ম্যাচের মতো যদি বোলিং হয়, তাহলে তৃতীয়বার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে পারে ভারত। না হলে অস্ট্রেলিয়া ষষ্ঠ খেতাব জিতবে।দেশের মাটিতে ওডিআই বিশ্বকাপ ফাইনালে লক্ষাধিক দর্শকের সামনে খেলার চাপ সত্ত্বেও, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচের শুরুটা খারাপ করেনি ভারত। রোহিতের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল তিনি বড় স্কোরের জন্য তৈরি। কিন্তু অপর ওপেনার শুবমান গিল ছন্দে ছিলেন না। ম্যাচের পঞ্চম ওভারেই আউট হয়ে যান এই তরুণ ব্যাটার। তিনি করেন মাত্র ৪ রান। এরপর বিরাট ও রোহিতের জুটিতে যোগ হয় ৪৬ রান। ৩১ বলে ৪৭ রান করে আউট হয়ে যান রোহিত। তাঁর ইনিংসে ছিল ৪টি বাউন্ডারি ও ৩টি ওভার-বাউন্ডারি। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বলে অসাধারণ ক্যাচ নিয়ে ভারতের অধিনায়ককে ফেরান ট্রেভিস হেড। পরপর ২ ম্যাচে শতরান করা শ্রেয়াস আইয়ার ৪ বল খেলে মাত্র ৩ রান করেই আউট হয়ে যান। ৬৩ বলে ৫৪ রান করেন বিরাট। তাঁর ইনিংসে ছিল ৪টি বাউন্ডারি। ১০৭ বলে ৬৬ রান করেন রাহুল। তাঁর ইনিংসে ছিল মাত্র ১টি বাউন্ডারি। অপর প্রান্তে পরপর উইকেট পড়তে দেখে ধৈর্য ধরে ব্যাটিং করেন রাহুল। কিন্তু তিনি বিরাটের পর সেভাবে আর কারও সাহায্য পেলেন না। ৯ রান করেই আউট হয়ে যান রবীন্দ্র জাদেজা। ১৮ রান করেন সূর্যকুমার যাদব। মহম্মদ শামি করেন ৬ রান। জসপ্রীত বুমরা করেন ১ রান। ১০ রান করেন কুলদীপ যাদব। ৯ রান করে অপরাজিত থাকেন মহম্মদ সিরাজ।নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের পিচে গতি ও বাউন্স কম দেখে প্রথম পাওয়ার প্লে-তেই ম্যাক্সওয়েলকে আক্রমণে আনেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। তাঁর পরিকল্পনা সফলও হয়। যদিও ভারতীয় বোলিং বিশেষ করে সামি আশা দেখাতে শুরু করেন। ডেভিড ওয়ার্নার ৭ রান করে স্লিপে কোহলির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। এরপর বুমরাহর ডেলিভারিতে ১৫ রানে ফিরলেন মিচেল মার্শ। অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটিং স্তম্ভ স্টিভ স্মিথকেও ৪ রানের মাথায় ফেরান বুমরাহ। তবে টেভিশ হেড টিকে ছিলেন। তিনি মার্নস লাবুসেনকে নিয়ে আসতে আসতে দলকে টেনে নিয়ে যান। আর অস্ট্রেলিয়াকে ট্রফি এনে দিলেন। ২০১১ সালের পরে ট্রফি এল না ভারতের। ২০১৫ সালের পরে ফের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া।