
বিপ্লব দাশ : ইউক্রেনে সামরিক সাহায্য পাঠাবে না আমেরিকা। ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর ইউক্রেন ইস্যুতে বাঁক নিয়েছে আন্তর্জাতিক রাজনীতি। কারণ, এরমধ্যে শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করেছে আমেরিকা। রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চেয়েছে আমেরিকা। পুতিন এই শান্তি আলোচনায় ইচ্ছা প্রকাশ করলেও শেষ মুহূর্তে বেঁকে বসেন জেলেনস্কি। জানিয়ে দিয়েছেন, ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে আলোচনা নয়। একই সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট যে ন্যাটোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে রাজি নন তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন। সংঘাত এখানেই। তা আরও ঘনীভূত হয়ে উঠেছে ন্যাটোর তৎপরতায়।ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ শুক্রবার বলেন, ‘‘আমরা সর্বতো ভাবে ইউক্রেনের পাশে থাকব।’’ ইতিমধ্যে ১০ হাজারেরও বেশি সেনা নিয়ে ইউক্রেন-রোমানিয়ার মাটিতে ন্যাটো শক্তি সর্বাঙ্গীন যুদ্ধ মহড়া শুরু করেছে। উদ্দেশ্য, ইউক্রেন সীমান্তের মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা। যাকে বলা হচ্ছে, ‘স্টেডফাস্ট ডার্ট ২০২৫’।
পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে তাতে ১৯৩৯-এর গর্জন মনে করিয়ে দিচ্ছে। সেবারও যুদ্ধের মূল চরিত্র ছিল আধিপত্য। প্রথমত, জার্মানির পোলান্ড আক্রমণ। দ্বিতীয়ত, চিনের বিরুদ্ধে জাপানের যুদ্ধ ঘোষণা। তৃতীয়ত, ইতালো-ইথিওপিয়ান যুদ্ধ। মোদ্দাকথা, দখলদারী। সেখান থেকে দু ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় গোটা বিশ্ব। ইউক্রেন হামলার পিছনেও এই আধিপত্যের হুংকারই কানে বাজছে।
বস্তুত, এই আশঙ্কার শিকড় অনেক গভীরে। তবে বিষয়টি সেই একই- আধিপত্য। এবং তার জন্য আগ্রাসন। তাই বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না পশ্চিমী আগ্রাসনের বাসনাই এর প্রকৃত জ্বালানি। পুতিন তাতে আগুন ধরিয়েছেন মাত্র। ফলে এই অশান্তির পিছনে যে একটি বহুমাত্রিক বিপর্যয় রয়েছে তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ইউক্রেন হামলার পিছনে যুক্তি হিসেবে এই পশ্চিমী শক্তি অর্থাৎ ন্যাটোর বাসনাকেই তুলে ধরেছেন। যদিও তাঁর পূর্ণাঙ্গ সোভিয়েত ইউনিয়ানের আবেগ বাস্তবকে বুঝতে বাধা দিচ্ছে। তাঁর একটি উক্তি, “যে সোভিয়েত ইউনিয়নকে মিস করে না তার কোনও হৃদয় নেই। যে এটি ফিরে পেতে চায় তার কোনও মস্তিষ্ক নেই।”