
বিপ্লব দাশ: বাংলাদশে চলতি কার্যকলাপে মানবতাবিরোধী অপরাধ হচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। যে ভাবে গদিচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জমানায় ‘পরিকল্পিত বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’-এর অভিযোগ উঠেছে তা নিয়েও কড়া মন্তব্য করা হয়েছে এই রিপোর্টে। তাদের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম’-এর রিপোর্টের ভিত্তিতে হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশে অশান্তি দূর করতে এবং রাজনৈতিক স্বচ্ছতা ফেরাতে রাষ্ট্রপুঞ্জ মানবাধিকার কমিশনের তরফে সম্প্রতি পাঁচ দফা সুপারিশ করা হয়েছে ।
এই রিপোর্টে বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, নির্যাতন-সহ অপরাধের তদন্ত এবং বিচারের জন্য উপযুক্ত, স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও সম্মিলিত প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। মুখ্য কথা হল, এ সব অপরাধ যাঁদের নির্দেশে হয়েছে, বাংলাদেশের আইন ও আন্তর্জাতিক বিধি অনুযায়ী তাঁদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি নজর দিতে হবে, যাঁরা নির্যাতিত হয়েছেন তাঁদের জন্য ন্যায়বিচার এবং ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। এই সঙ্গে বলা হয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধের উদ্দেশ্যে সংশোধন করতে হবে পুলিশবিধি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই সংশোধন যেন মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক বিধি ও মাপকাঠির সঙ্গে সঙ্গতি রাখা হয়।
অতীতে এ সব আইন ব্যবহার করে সংবাদমাধ্যম, নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক বিরোধীদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা চালাতে দেখা গিয়েছে। তার পুনরাবৃত্তি এড়ানো প্রয়োজন বলে সতর্ক করা হয়েছে। এইরকম সামাজিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে নানান গোলযোগের উল্লেখ করে এই রিপোর্ট কার্যত বাংলাদেশের জনহীতকর রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি হল, রাষ্ট্রসংঘের এই তৎপরতার পিছনে কী কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে ? বাংলাদেশের অচলায়তন নিয়ে সত্যি কি আন্তর্জাতিক মহল উদ্বিগ্ন ? নাকি এর পিছনে কাজ করছে সর্ষের ভিতরকার ভূত। বিষয়টি চিন ও আমেরিকার শত্রুকামিতার উপসর্গ নয় তো ? উপমহাদেশে ঘাঁটি গড়তে আমেরিকা যে বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই তৎপর তার নজির রয়েছে ৭১-এর যুদ্ধে। কিন্তু চিনের বাড়বাড়ন্তে এই উপমহাদেশে আধিপত্য নিয়ে আমেরিকার বহুকালের প্রচেষ্টা কি দিবাস্বপ্নেই থেকে যাবে ? দ্বন্দ্বটা এখানেই। তাই চিন হোক বা আমেরিকা, ভারতের বিপদ উভয় ক্ষেত্রেই। তাই বাংলাদেশের অচলায়তন মেটাতে ভারতের কূটনৈতিক কৌশল কোন দিকে যায় সেদিকেই তাকিয়ে আছে আন্তর্জতিক মহল। মোদীর আমেরিকা সফরে এই ইস্যুটি নিশ্চয়ই গুরুত্ব রাখে।