
ওঙ্কার ডেস্ক : ইউক্রেন ঘিরে একজোট হচ্ছে ইউরোপের দেশগুলি। ফলে যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত আলোচনা কোনো ভাবে ভেস্তে গেলে তার পরিণতি কী হবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন আন্তর্জাতিক মহল। লন্ডনের নর্থউডে আয়োজিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈঠকের পরে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারও উদ্বগজনক পরিস্থিতির ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাঁর সাফ কথা, ‘‘যুদ্ধবিরতি ভেস্তে গেলে পরিণতি গুরুতর হবে।’’
এখনও বিশ্বের কাছে জ্বলজ্বল করছে ২৮ ফেব্রুয়ারির বৈঠক। সেদিন সারাবিশ্ব দেখেচ্ছিল হোয়াইট হাউসে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কির বাগ্যুদ্ধ। অপমানিত ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সেই প্রতিশ্রুতি মাফিক শুক্রবার ইউক্রেনে সরাসরি সেনা পাঠানোর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনায় বসলেন ইউরোপের ২০টি দেশের রাষ্ট্রনেতারা। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারের সভাপতিত্বে এদিন ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আপাতত আমেরিকার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব কার্যকর হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে নজর রাখা হবে। কিন্তু পরিস্থিতি উলটো দিকে গেলে পরিণতি মারাত্মক হতে পারে বলে মনে করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। স্টার্মার জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সামরিক পরিকল্পনা সঠিক দিশাতেই এগোচ্ছে।’’ তিনি মনে করিয়ে দেন, চলতি মাসের গোড়াতেই ঋণনীতি শিথিল করে প্রতিরক্ষা খাতে আরও অর্থ বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। উদ্দেশ্য যে ইউক্রেন পরিস্থিতি তা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এমনিতেই পশ্চিম ইউরোপের অধিকাংশ দেশই রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য করে এসেছে। ট্রাম্প হাত গুটিয়ে নেওয়ার কথা ঘোষণার পর সেই সহায়তায় আরও গতি আনতে চাইছে ইইউ। গত ৬ মার্চ ইইউ-এর ২৭টি সদস্যরাষ্ট্র প্রকাশ করেছে যৌথ ঘোষণাপত্র। তাতে বলা হয়েছে, ইউরোপের নিরাপত্তা জোরদার করতে ইইউ-এর সদস্যেরা মিলে ১৫ হাজার কোটি ইউরো ঋণ নেবে। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ১৪ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা। যার বড় অংশ ব্যয় হবে ইউক্রেনের সামরিক সাহায্যে।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মঙ্গলবার রাতে টেলিফোন-আলোচনায় ইউক্রেনের অসামরিক পরিকাঠামো, জনপদ এবং জ্বালানিক্ষেত্রে আগামী ৩০ দিন হামলা না চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। কিন্তু ট্রাম্পের তরফে দেওয়া ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ফের ইউক্রেনে হামলা চালায় রুশ সেনা। আগামী সপ্তাহে সৌদি আরবে আমেরিকার সঙ্গে রুশ ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের বৈঠক হওয়ার কথা। কিন্তু যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চললেও থেমে নেই রাশি-ইউক্রেন লড়াই। এই পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি নতুন মাত্রা পেল।