
বিপ্লব দাশ : ওমানের রাজধানী মাস্কটে রবিবার থেকে শুরু হয়েছে ভারত মহাসাগরীয় দেশগুলির সম্মেলন। দু’ দেশের কূটনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে দুদিনের এই সম্মেলনকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে ভারত ও বাংলাদেশ। এই সম্মেলনের ফাঁকে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের বৈঠক থেকে যে আভাস মিলেছে তাতে দু দেশের তিক্ততার শিগগির কোনো মীমাংসার ইংগিত মিলছে না। গঙ্গা চুক্তির পুনর্নবীকরণ, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা সার্ক সম্মেলনের পুনরুজ্জীবন নিয়ে যতই কথা হোক না কেন, তার ভিত্তিটা যে দু দেশের সুসম্পর্কের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে এই সহজ কথাটাই বোধগম্য হচ্ছে না বাংলাদেশের। এমন কি সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যর পরও। যেখানে তিনি বলেছিলেন, ভারত বাংলাদেশের বিষয়টি দেখবেন নরেন্দ্র মোদী।
ফলে সে দেশের তন মন যে বাস্তব থেকে অনেকটাই দূরেই তা বিলক্ষণ বুঝছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এর অ্যাসিড টেস্টটাও সুচতুর ভাবে সেরে নিয়েছে ভারত। দু দেশের পার্শ্ব বৈঠকে রাষ্ট্রীয় সহযোগিতায় ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়িতে তাণ্ডব ও ভাঙচুরের ঘটনা এবং সে দেশে সংখ্যালঘুদের উপর চলতি নির্যাতনকে যে ভারত নিন্দা করে তা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এখানেই বাইরে এসে পড়েছে বাংলাদেশের মনোভাব। এমন অমানবিক ও ঐতিহাসিক কলঙ্ককে ঢাকা দিতে বাংলাদেশ তড়িহড়ি জানিয়েছে, সেদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের বিবৃতি “অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত”। আর এতেই ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের অবাস্তব নীতি ও অন্তরস্খলনের চরিত্রটি। যা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের জামাত প্রধান শফিকুর রহমানের মন্তব্যে। তিনি জানিয়েছেন, ভারতের আনুকূল্যে দেশ স্বাধীন হোক, তা আমরা চাইনি। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশ চেয়েছিল ? তিনি জানিয়েছেন, চোরাগোপ্তা হিংসার মাধ্যমে। অর্থাৎ গোরিলা যুদ্ধে। ঠিক এখন যে ভাবে ভারতের বিরুদ্ধে জামাত সমর্থকরা প্রায়শই হাস্যকর হম্বিতম্বি দেখাচ্ছে, ৩০-৩৫ বছর আগেও সেটাই ছিল জামাতের বিচক্ষণতার মাত্রা। তাই আবার বলতে হচ্ছে বাস্তব থেকে সে দেশ অনেকটাই দূরে পড়ে আছে। পড়ে আছে এ কারণে, যেহেতু ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো প্রচেষ্টাই দেখা যাচ্ছে না। ক্ষমতা কুক্ষিকরণের যে ‘ম্যানিস্টেশন’ সেদিন ছিল তা আজও চলছে। বাংলাদেশের এই নতুন বোতলে পুরোনো নীতির প্যাকেজিংটা জানার জন্য মাস্কটের সম্মেলনের দিকে তাকিয়ে আছে আন্তর্জাতিক মহল।