
ওঙ্কার ডেস্ক: গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বেড়েছে। যার প্রত্যাঘাত হিসেবে ভারত পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি জায়গায় জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে বলে দাবি। যদিও সেই ঘটনার পর ভারতের বিভিন্ন জায়গায় পাল্টা প্রত্যাঘাত করা হয় ইসলামাবাদের তরফে। দুই দেশের উত্তেজনার আবহে পাকিস্তানের মাটিতে দাঁড়িয়ে একাধিক পাক মন্ত্রী পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগের হুমকি দেন। যার পর চর্চায় উঠে এসেছে দুই দেশের পরমাণু অস্ত্র। চাইলেই কী পরমাণু অস্ত্র কোনও দেশের উপর প্রয়োগ করা যায়? কী বলছে দুই দেশের পরমাণু নীতি?
প্রথমত, ভারতের পরমাণু নীতিতে বলা হয়েছে নো ফার্স্ট ইউজ। অর্থাৎ ভারত কখনও প্রথমে কোনও দেশের উপর পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগ করবে না। যদি কোনও দেশ ভারতের উপরে পরমাণু অস্ত্র দিয়ে আঘাত হানে তাহলে ভারত পাল্টা জবাব দেবে। শুধু তাই নয়, যাদের কাছে পরমাণু অস্ত্র নেই, এমন দেশগুলির উপর ভারত পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে না। দ্বিতীয়ত, ভারতের নীতিতে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র শত্রুপক্ষকে আটকানোর জন্য পরমাণু অস্ত্র রাখা হচ্ছে। যাতে আক্রমণ করার সাহস না পায়। তৃতীয়ত, ব্যাপক প্রতিশোধের জন্য ভারত পরমাণু অস্ত্রের প্রয়োগ করতে পারবে। অর্থাৎ যদি কেউ পরমাণু আক্রমণ করে তবে ভারত এমন জবাব দেবে যাতে শত্রু পক্ষের সামরিক শক্তি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। চতুর্থত, যদি কেউ ভারতের উপর জীবাণু বা রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে ক্ষতি করতে চায়, সেক্ষেত্রেও পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগ করার কথা বলা হয়েছে।
অন্য দিকে পাকিস্তানের নীতিতে এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। পরমাণু অস্ত্রের প্রয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে তারা ধোঁয়াশা রেখেছে। কবে, কীভাবে এই পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে ইসলামাবাদ সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেনি। তবে ২০০১ সালে পাকিস্তানের এক শীর্ষ সেনা কর্তা খালিদ কিদওয়াই বলেছিলেন, পাকিস্তান চারটি বড় কারণে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে, প্রথমত, পাকিস্তানের বড় কোনও অংশ শত্রু পক্ষ দখল করলে। দ্বিতীয়ত, পাকিস্তানের বড় অংশের সেনাশক্তি যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তৃতীয়ত, যদি দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হওয়ার মুখে পড়ে। চতুর্থত, দেশে বড় ধরনের রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হলে। তবে পাকিস্তান এখনও বলছে, ‘নো ফার্স্ট ইউজ’ নীতি তারা মানে না। যুদ্ধক্ষেত্রে খুব সীমিত এলাকায় ব্যবহারের জন্য তারা ছোট পরমাণু অস্ত্রও তৈরি করেছে।