
ওঙ্কার ডেস্ক : কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় আরও এক বাঙালির মৃত্যুর খবর এল। স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে কয়েকদিন আগেই কাশ্মীরে বেড়াতে গেছিলেন বেহালার বাসিন্দা সমীর গুহ। বুধবারই তাঁদের ফেরার কথা ছিল। কিন্তু স্ত্রী ও মেয়ে বেঁচে ফিরলেও, বাড়ি ফেরা হল না সমীরবাবুর।
সমীরের স্ত্রীর কথায়, গুলির আওয়াজ পেয়েই তাঁর স্বামী তাঁদের মাটিতে শুয়ে পড়তে বলছিলেন। মেয়েকেও শুইয়ে দিয়েছিলেন। পালানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। তবে সেই সময়টুকু পেলেন না ততক্ষণে মুখে মাস্ক লাগিয়ে সামনে এসে গেছিল জঙ্গিরা। গুলি চালায় তারা। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সমীর।
৫২ বছরের সমীর কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী। বুধবারই পরিবার নিয়ে বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁর। তবে বর্তমানে তাঁর দেহ রাখা আছে শ্রীনগরের মর্গে। বেহালার বাড়িতে ফেরার জন্য সাহায্যের আর্তি জানিয়েছেন জঙ্গি হানায় নিহত বাঙালি পর্যটকের স্ত্রী।
এর আগে মঙ্গলবারের জঙ্গি হামলায় আরও দুই বাঙালির মৃত্যুর খবর এসেছিল। তাঁদের একজন দক্ষিণ কলকাতার বৈষ্ণবঘাটা লেনের বাসিন্দা বিতান অধিকারী, অন্যজন পুরুলিয়ার বাসিন্দা মণীশ রঞ্জন। নিহত মণীশ রঞ্জন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগে কর্মরত ছিলেন। গত ২ বছর ধরে তিনি হায়দরাবাদে থাকতেন। মণীশের বাড়ি পুরুলিয়ার ঝালদা শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে। ছুটিতে সপরিবারে কাশ্মীরে বেড়াতে গেছিলেন ওই IB অফিসার।
মঙ্গলবার পহেলগাঁও হিল স্টেশন থেকে প্রায় ৫ কিমি দূরে বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গিদের এলোপাথাড়ি গুলিতে প্রাণ হারান মণীশ। তাঁর স্ত্রী জানিয়েছেন, ঘটনার কিছুক্ষণ আগে ছবি তুলছিলেন তাঁরা। তারপর চেয়ার বসে কিছু খাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই গুলির আওয়াজ পান। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাদের সামনে চলে আসে জঙ্গিরা। তারপরই গুলি চালায়।
২৬ জন খুন হওয়া পর্যটকদের মধ্যে ২ জন বিদেশি নাগরিকও রয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এই হামলা পূর্বপরিকল্পিত এবং যাতে কোনও ভুল না হয় সে কারণে পহেলগাঁওয়ের ওই জায়গা বারবার রেইকি করেছিল জঙ্গিরা।
আহত পর্যটকদের অনেকেই দাবি করেছেন, গুলি করার আগে তাদের নাম জানতে চেয়েছিল জঙ্গিরা। কারও আবার প্যান্ট খোলা হয় জোর করে। অর্থাৎ ধর্মীয় পরিচয় জেনেই খুন করা হয়েছে। তাঁরা এও জানান, জঙ্গিরা সকলেই ছিল ভারতীয় সেনার পোশাকে। এতএব এই ঘটনায় যে স্থানীয়রা যুক্ত থাকতে পারেন, সেই আশঙ্কাও করা হচ্ছে।