
ওঙ্কার অনলাইন ডেস্কঃ পঞ্চায়েত নির্বাচন বন্ধ এবং রাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা নিয়ে করা জনস্বার্থ মামলা খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন মামলা খারিজের নির্দেশ দিয়ে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বলেন কোন পরিস্থতিতে রাজ্যে জরুরি অবস্থা জারি করা হতে পারে, সংবিধান অনুসারে তা একমাত্র রাজ্যপাল সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
প্রসঙ্গত এদিন পঞ্চায়েত নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া হোক, এবং রাজ্যপালকে রাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণার নির্দেশ দিক উচ্চ আদালত এই মর্মে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন প্রাক্তন সেনা আধিকারিক শ্রীধর বাগারি । মামলাকারির আইনজীবী প্রধান বিচারপতির এজলাসে যুক্তি দেন উচ্চ আদালতের সেই ক্ষমতা রয়েছে এবং তা প্রয়োগ করুক আদালত।
মামলাকারির আরও অভিযোগ, রাজ্য নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নয়, কমিশন শাসক দলের নির্দেশ মতো কাজ করছে। তাতে মানুষের নিরাপত্তা, মানুষের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব হচ্ছে। রাজ্যপাল এবং হাই কোর্টের ক্ষমতা আছে নির্বাচন বন্ধ করে দেবার।
রাজ্য সরকারের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল পালটা সওয়াল করে বলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশন দিনক্ষণ ঘোষণা করার পর আদালত তাতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এমনকি লোকসভা, বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর কোনও আদালত তাতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না বলেও সওয়াল করেন এজি।
এদিন এজি আদালতে জানান নির্বাচনের দফা ঘোষণা হওয়ার পর আর নতুন করে দফা বাড়ানোর আইন নেই। মানুষের রায়ে সরকার নির্বাচিত হয়। সেখানে রাজ্যপাল বা হাইকোর্ট কখনোই জরুরি অবস্থা জারি করতে পারে না। তাই এই মামলার কোন গ্রহণযোগ্যতা নেই বলেও দাবি করেন এজি।
জনস্বার্থ মামলা দায়েরকারি প্রাক্তন সেনা আধিকারিক শ্রীধর বাগারির আইনজীবী পাল্টা সওয়ান করে বলেন ইতিমধ্যেই ১২% আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন প্রার্থীরা। সেটা কি মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব নয় ? নির্বাচনে মানুষ যদি না গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারে তাহলে সেটা কিসের নির্বাচন ?
দুপক্ষের আইনজীবীর সওয়াল জবাবের পর প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বলেন নির্বাচন কমিশন একটি স্বশাসিত সংস্থা, তাই আদালত সেখানে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। মানুষের নিরাপত্তা, জীবন জীবিকার উপর আঘাত এলে আদালত নিশ্চিত ভাবে হস্তক্ষেপ করবে। রাজ্যপালের ক্ষমতা রয়েছে, তিনি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারেন। কিন্তু আদালত এই সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, রাজ্যপালকে এবিষয়ে নির্দেশও দিতে পারেনা। এরপরই জনস্বার্থ মামলাটি খারিজ করে দেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্য।