
ওঙ্কার বাংলা অনলাইন ডেস্কঃ মনিপুরে সাম্প্রতিক অশান্তির পিছনে আন্তর্জাতিক শক্তির হাত থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিলেন মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। পদত্যাগের সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নিয়ে এদিন একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বীরেন সিং বলেন রাজ্যে অশান্তির ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত। আমি মনিপুরকে ভাঙতে দেব না। প্রসঙ্গত গত ৩ মে থেকে মেইতি আর কুকিদের জাতি সংঘর্ষে জ্বলছে উত্তর পূর্ব ভারতের এই ছোট্ট রাজ্যটি। এখনো পর্যন্ত দু মাসের জাতি দাঙ্গায় প্রায় দেড়শো জন নিহত হয়েছেন। ঘর ছাড়া প্রায় ৫০ হাজার মানুষ রাত কাটাচ্ছেন ত্রাণ শিবিরে। রাজ্যে সেনা নামিয়েও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা যায় নি। এই প্রসঙ্গে মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বলেন মনিপুরের সঙ্গে মায়ানমার ৩৯৮ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। কাছেই রয়েছে চিন সীমান্তও। ভারতীয় সেনা জওয়ানরা ২৪ ঘণ্টাই কড়া পাহাড়া দেন কিন্তু দুর্গম ওই সীমান্ত দিয়ে বিদেশি জঙ্গীদের অনুপ্রবেশের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এই ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত। বিদেশি শক্তিই ভারতের অখণ্ডতা ভাঙতে চাইছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এরপরই মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন আমি মনিপুরকে ভাঙতে দেব না। তিনি বলেন আমাদের ছোট রাজ্যে ৩৪টি উপজাতি হাজার হাজার বছর ধরে পাশাপাশি বাস করছি, অল্প স্বল্প গণ্ডগোল আগেও হয়েছে আবার মিটেও গেছে কিন্তু এমন ঘটনা তো কখনো ঘটেনি। আমরা এক, সবাইকে আবার সব কিছু ভুলে একসঙ্গে শান্তিতে থাকার আর্জিও জানান মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রী।
সাক্ষাৎকারে এন বীরেন সিং বলেন তিনি ভেবেছিলেন তাঁর উপর জনগণের আস্থা নেই। তাই তিনি পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন। পরে তাঁর প্রতি মানুষের ভালবাসা দেখে নিজের সিদ্ধান্ত বদলান তিনি। যে ভাবে প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কুশপুতুল দাহ করা হচ্ছিল তাতেও তিনি মর্মাহত বলে জানান এন বীরেন সিং। মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বলেন ওঁদের কোনও দোষ নেই। ভারতের মতো বড় দেশের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অশান্তি থামাতে মনিপুরে তিন দিন ধরে থেকে পরিস্থিতি বুঝতে চাইলেন। উনি সর্বদলীয় বৈঠকও ডেকে ছিলেন। আমরা সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নিয়েছি। জনগনের কাছে শান্তির আবেদন জানিয়েছি। পাশাপাশি বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সনাক্ত করে ফেরত পাঠানো হবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। এদিন রাহুল গান্ধির মনিপুর সফর নিয়েও তীব্র আক্রমণ করেন এন বীরেন সিং। বলেন কংগ্রেস নোংরা রাজনীতি করছে। ওদের জন্যই এই বিষময় ফল মনিপুরবাসী ভোগ করছে বলেও অভিযোগ করেন মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত মনিপুরের হাই কোর্ট মেইতিদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে মিছিল করে মনিপুরের জনজাতি ছাত্র সংগঠনগুলি। অভিযোগ সেই মিছিলে হামলা চালায় মেইতিরা। তারপরই কুকিদের সঙ্গে মেইতিদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উত্তপিত হয়ে ওঠে মনিপুর।