
স্পোর্টস ডেস্ক :প্রথম ম্যাচে দলের জয়ের দোরগোড়া থেকে ফিরে আসাটাকে মোটেই ভাল ভাবে নিচ্ছেন না মোহনবাগানের স্প্যানিশ কোচ হোসে মোলিনা। দলের খেলায় তিনি যে একেবারেই খুশি নন, তা অবশ্য নন। কিন্তু কিছু কিছু মুহূর্তে যে ভুল হচ্ছে, যে ভাবে গত চারটি ম্যাচে ন’টি গোল খেয়েছে তাঁর রক্ষণ বিভাগ, তাতে খুশি নন মোলিনা। শুক্রবার আইএসএল ২০২৪-২৫-এর উদ্বোধনী ম্যাচের শেষ মিনিটে সিরিয়ান ডিফেন্ডার থায়ের ক্রুমার দেওয়া গোলে মুম্বই সিটি এফসি যে ভাবে তাদের হারা ম্যাচ ড্র করে মাঠ ছাড়ল, তাতে খুশি নন কোচ। এই ম্যাচ থেকে একটিই ইতিবাচক দিক খুঁজে পেয়েছেন তিনি, বাংলার ডিফেন্ডার দীপ্পেন্দু বিশ্বাসের পারফরম্যান্স।
শুক্রবার বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে লিগে তাদের প্রথম ম্যাচে চার মিনিটের মাথায় প্রাক্তন বাগান ডিফেন্ডার তিরির নিজ গোলে এগিয়ে যাওয়া সবুজ-মেরুন বাহিনী ব্যবধান দ্বিগুন করে নেয় ২৮ মিনিটের মধ্যে স্প্যানিশ ডিফেন্ডার আলবার্তো রড্রিগেজের গোলে। ৭০ মিনিটের মাথায় ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করে মুম্বইকে প্রথম গোল এনে দেন তিরি এবং ৯০ মিনিটের মাথায় ক্রুমার গোল তাদের প্রায় হারা ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট এনে দেয়।
এই ড্রয়ের পর মোলিনা সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের দল খারাপ ফুটবল খেলেনি। কিন্তু কয়েকটা মুহূর্তে ভুল করে ফেলেছে। এই ভুলগুলো শোধরাতে হবে। ছেলেরা ভাল খেলছে, আরও ভাল খেলার চেষ্টা করছে। আমরা আজ জয়ের দোরগোড়ায় ছিলাম। কিন্তু মুহূর্তের ভুলের জন্য তা সম্ভব হয়নি। এই ভুলগুলো বারবার করলে চলবে না”।
মুম্বই সিটি এফসি-র শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াইয়ের প্রশংসা করে মোলিনা বলেন, “মুম্বই দলের প্রাক মরশুম প্রস্তুতি আমাদের চেয়ে অনেক ভাল হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। আসলে ওদের কোচ একই আছে। তাই তার কৌশল ভাল ভাবে রপ্ত করে নিতে পেরেছে তার খেলোয়াড়রা। আমি এই দলে নতুন। এখনও আমার কৌশল বোধহয় ছেলেরা সবাই ঠিকমতো বুঝতে পারেনি। তবে আজকের ম্যাচে আমরা বুঝে নিলাম, কোন কোন জায়গায় আমরা পিছিয়ে আছি। পরের ম্যাচের আগে আশা করি, এগুলো শুধরে নিয়ে মাঠে নামতে পারব। আশা করি, পরের ম্যাচে আমরা আজকের চেয়ে ভাল খেলব”।
গত চারটি ম্যাচে দলের ন’টি গোল খাওয়া প্রসঙ্গ উঠলে সবুজ-মেরুন কোচ বলেন, “এটা মোটেই ভাল নয়। আমি মোটেই এতে খুশি নই। এ জন্য হয়তো আমিই দোষী। আমাকেই দলের ছেলেদের ঠিকমতো বোঝাতে হবে। ওরা যাতে এত গোল না খায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতি ম্যাচে এত গোল খাওয়া আমার মোটেই পছন্দ নয়। আমি ব্যাপারটা গুরুত্ব দিয়ে দেখব”।
দলের অ্যাটাকারদের কাছ থেকেও তিনি আরও বেশি প্রত্যাশা করেন, এ কথা জানাতে ভোলেননি কোচ। বলেন, “ওদের কাছ থেকে আরও ভাল পারফরম্যান্সের প্রত্যাশা রয়েছে আমার। দিমি, জেসন, ম্যাকলারেন যখন খেলবে, তখন। ওরা যে কোনও ম্যাচে ফারাক গড়ে দিতে পারে। তাই ওদের কাছ থেকে আমি আরও বেশি কিছু চাই। সে জন্য ওদের আমি সাহায্য করছি। ওরাও খাটছে। কিন্তু সত্যিটা হল, ম্যাচে ওদের আরও বেশি দিতে হবে। আমি নিশ্চিত, যত সময় গড়াবে ওরা আরও ভাল পারফরম্যান্স দেখাবে”।
এ দিন তিন ডিফেন্ডারে খেলা মোহনবাগানের রক্ষণ সামলানোর দায়িত্বে ছিলেন বাংলার দীপ্পেন্দু বিশ্বাস। তাঁর খেলায় খুশি কোচ বলেন, “দীপ্পেন্দুর খেলায় আমি খুশি। ও ডুরান্ড কাপে কয়েকটা ম্যাচে খেলেছিল। তখনই ঠিক করি ওকে আমি আইএসএলে খেলাব। প্রথম ম্যাচে ওর পারফরম্যান্স আমার ভাল লেগেছে। আনোয়ার আলি চলে যাওয়ার পর একজন ভাল দেশীয় সেন্টার ব্যাক খুঁজে বার করা মোটেই সোজা কাজ ছিল না। দীপ্পেন্দুকে ঠিকমতো তৈরি করতে পারলে আমরা আইএসএলে একজন ভাল ডিফেন্ডার পেতে পারি। আক্রমণেও একজন বাড়তি বিদেশী খেলোয়াড় পেতে পারি। দীপ্পেন্দু পরিশ্রমী ছেলে। নিজেকে প্রমাণ করতে চায়। ওকে ভবিষ্যতেও খেলাব”।