
বিপ্লব দাশ : সুষমা স্বরাজের পর রেখা গুপ্তা, ২৭ বছর পর দিল্লিতে ক্ষমতায় ফিরল বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে যা ছিল প্রায় তিন যুগের প্রত্যাশা। ছিল আক্ষেপ, চ্যালেঞ্জও ছিল। এবার তাই প্রথম থেকে ধরে বেঁধে চলেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। যে সুযোগ তুলে দিয়েছিল বিরোধীরা, তাকে সাকার করাই ছিল একমাত্র লক্ষ্য ছিল। তাই নির্বাচনে দলের কোনো মুখ আনা হয়নি। ভোটারদের কাছে তুল্যমান ছিল মোদী্র ক্যারিশমা। এমন কি হিন্দু ভাবাবেগকে ভোটযন্ত্রে টানতে মহাকুম্ভে মোদী পুন্যস্নান করেছিলেন দিল্লির ভোটের দিন। এই নিয়ে বিরোধীদের মধ্যেও আলোচিত হয়েছেন তিনি, হিন্দুত্বের প্রভাব মেপেছেন বিশেষজ্ঞরা, তবে নিন্দুকেরা যাই বলুন, কোনো ভ্রুক্ষেপ ছিল না তাঁর। পাখির চোখ ছিল দিল্লির ভোট। কার্যত মোদি-বিজেপির জমানায় দল ভারত দখলের দোরগড়ায় এলেও, তৃপ্তির ঢোক গেলায় এই এক কাঁটা তো ছিল। কারণ, খোদ রাজধানীতে ব্রাত্যই থেকে গিয়েছিল বিজেপি। নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী এই আক্ষেপের কথা তুলে ধরেছেন প্রকাশ্যে, জনসমাবেশে। রাজনৈতিক সাফল্যের পথে এটা যে তাঁর কাছে একটা বিষম কাঁটা, এটা বুঝতেন তিনি। অমিত শাহ্ও বলেছিলেন বিজেপির স্বর্ণযুগ এখনো আসেনি। কারণ সেই একই, দিল্লি অধরা। এতদিনে বিজেপির অশ্বমেধের ঘোড়া বীরদর্পে এসে পৌঁছুল রামলিলা ময়দানে। বৃহস্পতিবারের সেই মহেন্দ্রক্ষণে মোদী নিশ্চয়ই পরিতৃপ্ত বুকে উপস্থিত থাকতে পেরেছিলেন শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে। কিন্তু কথা হল, যাঁকে রাজধানীর কুর্শিতে নিয়ে আসা হল, সেই চতুর্থ মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাটনে কী জড়িয়ে দেওয়া হল না একটা বড় চ্যালেঞ্জ ? দলের ভিতরে এবং দিল্লিবাসীর প্রায় ঘরে ঘরে প্রশ্ন তো একটাই, কী ভাবে সামলাবেন রেখা এই বক্র রাজ্যপাট।
প্রথমত গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব সামলা দিতেই যে রেখা গুপ্তাকে মুখ্যমন্ত্রী করা হল এটা মনে করছেন অনেকে। কারণ উপযুক্ত দাবিদারের ঘাটতি ছিলা না। তবু রেখা গুপ্তকে নিয়ে আসার পক্ষে যুক্তি ছিল নিশ্চয়ই অনেকগুলি। যার মধ্যে অন্যতম বেনিয়াদের মন জোগানো। কিন্তু বিজেপি শাসিত কোনো রাজ্যে মহিলা মুখ্যমন্ত্রী না থাকার গ্লানিটাও চেপে বসেছিল বহুদিন ধরে। এরসঙ্গে আরও একটা বড় কারণ আর এস এস। রাজনৈতিক হিসেব যাই থাক না কেন, রেখা গুপ্তাকে মনোনিত করে বিজেপি একটা দৃষ্টান্তও গড়ে তুলল, তা হলে এই নিয়ে চারজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হলেন রাজধানীতে।