
নিজস্ব সংবাদদাতা : ২০২২ সালের ২২ জুলাই যে দিন রাজ্যজুড়ে শিক্ষাক্ষেত্রের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তোলপাড় শুরু হয়, সেদিনই গ্রেফতার হন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তার ঘনিষ্ঠা অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। প্রায় ৫০ কোটি টাকা নগদ, সোনার গয়না ও বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার হয় অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে। সেই ঘটনায় গোটা রাজ্যজুড়ে প্রতিক্রিয়ার ঝড় ওঠে।
গ্রেফতারির ৮৫৭ দিন পর জামিনে মুক্তি পান অর্পিতা, যদিও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন এখনও ঝুলেই রয়েছে। জামিনে মুক্ত হওয়ার কিছু মাসের মধ্যেই ফের শিরোনামে অর্পিতা। টালিগঞ্জের সেই বিতর্কিত ফ্ল্যাট, যেখান থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছিল, সেই ফ্ল্যাটেই এখন চলছে সংস্কারের কাজ।
এই খবর সামনে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন চাকরিহারা এসএসসি প্রার্থীরা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাতিল হওয়া ২০১৬ সালের পুরো প্যানেলের ফলে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৫,৭৩৫ জন। যাঁরা ‘দাগি’ নন, তাঁরা আপাতত বেতন সহ স্কুলে যাচ্ছেন ঠিকই, তবে নতুন করে পরীক্ষায় বসার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই পরিস্থিতিতেই বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন ‘যোগ্য’ অথচ চাকরিহারা শিক্ষকরাপ্রশ্ন উঠছে—যে শিক্ষা দুর্নীতির ফলে লক্ষ পরিবারে নেমে এসেছে অন্ধকার, সেই দুর্নীতির অন্যতম অভিযুক্ত অর্পিতা কীভাবে তার ফ্ল্যাট সংস্কার করছেন? খরচের উৎস কী? কোথা থেকে আসছে টাকা ?
উল্লেখ্য, ইডি’র দাবি অনুসারে, অর্পিতার দু’টি ফ্ল্যাট থেকে মোট ৪৯ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা ও ৫ কোটি ৮ লক্ষ টাকার গয়না উদ্ধার হয়েছিল। এমনকি এ বছরের শুরুতেও তিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়ে পারিবারিক পেনশন পাওয়ার জন্য আবেদন করেন। ইডি বাজেয়াপ্ত করা অ্যাকাউন্টগুলির কারণে নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার অনুমতি চান তিনি। সেই সময়ও আলোচনায় আসেন অর্পিতা।
তবে এখন তাঁর এই ফ্ল্যাট সংস্কারের খরচ নতুন করে তদন্তের আওতায় আসবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। দুর্নীতির টাকায় তৈরি সম্পত্তি থেকে ফের বিনিয়োগ—এই চক্র আবারও নড়েচড়ে বসিয়েছে সাধারণ।