
আমজাদ আলী শেখ, পূর্ব বর্ধমান : এক পা মাটিতে পড়ে না। লাঠিই তাঁর ভরসা। আট বছর ধরে মাথার উপরে প্লাস্টিকের ছেঁড়া ত্রিপল। একটা নষ্ট হলে আর একটা কোনওমতে জোগাড় করে ঝুপড়ির মাথায় গুঁজে বাসা বাঁচাতে হয়। রোদ, বৃষ্টি ও শীত থেকে রক্ষা পেতে এমন ভাবেই দীর্ঘ আট বছর লড়াই চালাচ্ছেন গলসির খেতুড়া গ্রামের প্রতিবন্ধী বাসিন্দা লালু বাগদি। তবে ঝড় উঠলে বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিতে হয় অন্যত্র। দীর্ঘদিনের দুঃখ কষ্ট, ব্যথা, বেদনার কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভাঙলেন লালু।
আট বছর আগে ঘর তৈরির জন্য সরকারের তরফে কিছু টাকা পেয়েছিলেন লালুর মা আরতী বাগদি। তা দিয়ে বাড়ির খানিক কাজ হয়েছিল তবে টাকার অভাবে বন্ধ হয়ে যায় বাড়ি নির্মান। তখন থেকে নির্মীয়মাণ বাড়ির পাশে বাঁশ এ্যাসবেস্টারের সাথে ত্রিপল টাঁঙিয়ে দিন কাটাচ্ছে পরিবারটি। বাড়িতে ছোট ভাই ভুলু বাগদি মানসিক ভারসাম্যহীন। মা ও ছোট ভাইয়ের একমাত্র ভরসা লালু।
জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী লালু। তেমন কোনও কাজ করতে পারেন না। এদিকে সরকারি রেশনের চাল ও ভাতার টাকাতে ভরে না তিনটি পেট। তাই পেটের টানে ভিক্ষা করতে হয় তাকে. একসময় বাবা খেতমজুরের কাজ করে সংসার চালাতেন। তিনিও গত হয়েছেন বহুদিন। তখন থেকে তার উপরে সংসারের ভার। ভোট আসে ভোট যায়। প্রতিশ্রুতিও পান। তবে তা পূরণ হয়নি আজও। সরকারি দফতরে দফতরে ঘুরেও মেলেনি কোনও সহযোগিতা। এভাবেই পেরিয়ে গেল আট আটটা বছর.