
স্পোর্টস ডেস্ক : ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের শতবর্ষ ইতিহাস নিয়ে পরিচালক গৌতম ঘোষের তথ্যচিত্র প্রকাশ হলো নন্দনে। উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। আর যে মুখ্যমন্ত্রী ইমামিকে ইনভেস্টর করে ক্লাবে এনেছিলেন সেখানে শতবর্ষ প্রাচীন ক্লাবের ব্যর্থতায় মর্মাহত তিনিও এদিন মমতা বললেন, আমার একটা ক্ষোভ আছে। এত খারাপ ফলাফল হচ্ছে কেনো ! রেজাল্ট আসছে না কেনো ! ইমামি ক্লাবকে অনেক সাহায্য করছে। কিন্তু এগোতে গেলে ভাল ফুটবলার লাগে। এখানেই আমি ক্লাবকে বলব, আপনারা সঠিক পরামর্শ না দিলে ওঁরা এগোবেন কী করে ? সবচেয়ে কষ্ট পাচ্ছেন তো সমর্থকেরা। ক্লাবকর্তাদেরও এগোতে হবে। আমার মনে হয় না ইমামি সাহায্য করছে না। ওরা তো টাকা দিচ্ছে। কিন্তু তার বদলে ওদের ট্রফিটা তো দিতে হবে। অন্তত সেই চেষ্টা করতে হবে। শুধু টাকা ঢাললে হবে না। বুদ্ধি করে দলটা তৈরি করতে হবে। নীতুদাকে (ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার) বলছিলাম, আপনারা দলটা ভাল করে করছেন না কেন ? ডায়মন্ড হারবারকে দেখে শিখুন। ওদের দেখে বুঝুন, কেমন বুদ্ধি খাটিয়ে দল গড়েছে। ইস্টবেঙ্গলের কর্তারাও আগে থেকে ভাবুন, কাদের নেবেন। এক বছর ধরে পরিকল্পনা করুন। কঠোর সিদ্ধান্ত নিন। আগামী বছর যেন আর ব্যর্থতা না আসে। কিছু বললাম বলে মনে করবেন না। আমি একটু ঠোঁট কাঁটা। বাবা বলতেন এটা কন্ট্রোল করতে। আমি তা কাটিয়ে উঠতে পারিনি।’ এরপর তিনি বললেন, মহামেডান নিজেদের টাকা নিজেরা জোগাড় করে আইএসএলে খেলছে। মোহনবাগান তো সঞ্জীব গোয়েঙ্কা পেয়ে গেছে টাকার অভাব নেই। এই ৩ প্রধানই বাংলার সম্পদ। বাংলা দল তো আছেই সন্তোষ চ্যাম্পিয়ন। আমি নিজে খেলোয়াড়দের চাকরি দিলাম। ‘লাল হলুদ শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার পরে বললেন, এর থেকেই বোঝা যায় মুখ্যমন্ত্রী খেলার ব্যাপারে কতটা সচেতন। আমরা ভালো দল করব আগামী মরসুমে কথা দিলাম। ‘অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাওয়া মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত বললেন, মুখ্যমন্ত্রী অনেক আবেগ থেকে বলেছেন। ইস্টবেঙ্গলের এই ব্যর্থতা চোখে দেখা যায় না। বাংলার ফুটবল একা মোহনবাগান এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ওদেরও এগিয়ে আসতে হবে।’ ২০১৭ বিশ্বকাপের সময় ফিফার প্রতিনিধিরা কলকাতায় আরও একটি ফুটবল স্টেডিয়াম করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। রাজারহাটে স্টেডিয়াম বানানোর জন্য ১৫ একর জমি রেখে দিয়েছে রাজ্য সরকার। সেখানে এবার ক্রিকেট স্টেডিয়াম করার প্রস্তাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ইস্টবেঙ্গলের তথ্যচিত্র উদ্বোধনের মঞ্চে দাঁড়িয়েই সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গাঙ্গুলিকে এই প্রস্তাব দেন। একইসঙ্গে হাওড়ার ডুমুরজলাতে একটি ক্রিকেট অ্যাকাডেমি করার কথাও জানান। মমতা ব্যানার্জি বলেন, ‘আমাদের ফুটবল, তীরন্দাজি, টেবিল টেনিস অ্যাকাডেমি আছে। তোমরা ডুমুরজলাতে একটা ক্রিকেট অ্যাকাডেমি করে নাও। তোমাদের জন্য রাখা আছে। এছাড়াও আমরা চাইব সিএবি আরও একটা স্টেডিয়াম করুক। রাজারহাটে ১৫ একর জমি পড়ে আছে। আমরা তিন বছর অপেক্ষা করতে পারি। তারপর অন্য কোনও কাজে দিয়ে দিই। চেয়েছিলাম ফুটবল স্টেডিয়াম হোক। কিন্তু হল না। তোমরা আরেকটা ক্রিকেট স্টেডিয়াম করো। আমরা জমির বিষয়ে সবরকম সাহায্য করব।’ পাশাপাশি মহিলা আই লিগ জেতার জন্য খেলোয়াড় দের ট্রফি, উপহার ছাড়া ও ৫০ লাখ পুরস্কার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ২৮ এপ্রিল থেকে ৪ মে নন্দনে দেখা যাবে ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষর প্রথম দিন থেকে কোভিদডের আগের সময় অবধি এই তথ্য চিত্র।