
বিপ্লব দাশ : এস এস সি কাণ্ডের জট খোলা সহজ নয়। পরিস্থিতি ক্রমেই যে দিকে এগোচ্ছে তাতে একটা কথা ক্রমেই স্পষ্টতর- কঠিন সমস্যার চেয়ে সহজ সমস্য অনেক কঠিন। অর্থাৎ যে পরিস্থিতি যতই স্পষ্ট তার দৃশ্যায়ন ততই ধোঁয়াশা। চাকরিহারারা জানেন, সরকার জানে, বিরোধীরাও, তবু জট খোলার চেয়ে জট কঠিনতর হচ্ছে দিন দিন। যার সূত্রপাত করেছিলেন যিনি, তিনিও কূট কৌশলে নেমেছেন। এজলাশ আর রাজনীতি যে এক নয় এতদিনে তিনি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন নিশ্চয়ই। কথায় আছে, যে যায় লঙ্কায় সেই হয় রাবণ। এস এস সি কাণ্ডে যে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি, তাতে একজন ন্যায়নিষ্ঠ বিভীষণের ভীষণ প্রয়োজন মনে হয় এখন। অর্থাৎ জট খুলতে যে সূক্ষ্ণ গোঁজ দরকার তার হদিশ যতদিন না মিলছে ততদিন এই কাণ্ডের জট খোলা বোধ হয় মুশকিল। সবাই জানে এসএসসি-কাণ্ড কতটা স্বচ্ছ, অথচ তা চাপা দিতে কতই না অস্বচ্ছ তোড়জোড়।
আসলে সংকটটা যে এক্কেবারে হাঁড়িতে গিয়ে ঠেকেছে ! আঘাত পড়েছে পারিবারিক জীবনযাপনে। মানুষ তো দিশেহারা হবেই। অথচ এই পরিস্থিতির যাঁরা শিকার, তাঁদের কাছে আঁকড়ে ধরার খড়কূটোও নেই। সংশয় আর আশঙ্কার উপর দাঁড়িয়ে কারুর পক্ষে বেশীক্ষণ সংযম বেঁধে রাখা যায় না। তা দেখা যাচ্ছে বৈকি। যেখান থেকে তৈরি হচ্ছে মরা বাঁচার লড়াই। যা সৃষ্টি করছে দুর্বোধ্য জেদ। ফলে এরমধ্যে একটা কোমল উগ্রতা ইতিমধ্যে মাথা চাড়া দিতে শুরু করেছে। যা ভবিষ্যতের পক্ষে আদৌ সুখকর নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আরও একটা বিষয়, তা হল শিক্ষা ক্ষেত্রে স্থিতাবস্থা। যা সমাজের পক্ষে যথেষ্ট ক্ষতিকর। বলাবাহুল্য, পরিস্থিতি শিগগির স্বাভাবিক না হলে তার ভগ্ন চেহারা বেশিদিন আর পুরোনো আচ্ছাদনে ঢেকে রাখা যাবে না।
তাই “ভয়, কল্পনা, স্বপ্ন, আশা”- এসব ছেড়ে সবাইকে এখন মেনে নিতে হবে ছাইচাপা বাস্তবকে। তবেই এই অন্ধকার থেকে বেরানোর আলো দেখা যেতে পারে।