
সুভম কর্মকার , বাঁকুড়াঃ পরীক্ষা শুরুর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে আত্মঘাতী উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ায়। পরিবার সূত্রে খবর, ওই ছাত্রী সোমবার সকালে ঘুম থেকে উঠেছিল। কিন্তু সময় মতো ঘর থেকে বেরোয়নি। পরে ডাকাডাকি করায় সাড়া না মেলায় জোর করে দরজা খোলা হয়। উদ্ধার হয় তার ঝুলন্ত দেহ। মেয়ের ঘরের দরজা খুলে যে এমন দৃশ্য দেখতে হবে তা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি তিনি। এই ঘটনায় শোকের ছায়া গোটা পরিবারে।
বাঁকুড়ার জয়পুরের কারকবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন বর্ষা দে। স্থানীয় টানাদিঘি হাইস্কুলের ছাত্রী ছিল সে। এদিন সকালে তাঁর মা সময় মতো রান্নাবান্না করে তৈরি ছিলেন মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। পরীক্ষা দিতে যাওয়ার জন্য অনেক সকালেই উঠেছিল কিশোরী। হাত-মুখ ধুয়ে নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করে পড়তেও বসেছিল। কিন্তু মা তাঁকে স্নান করার জন্য ডাকতে গেলে দরজা খোলেনি। কিছুক্ষণ ডাকাডাকি করার পরই জোর করে দরজা ঠেলে তা খোলা হয়। ততক্ষণে সব শেষ। কিন্তু মেয়ের ঘরের দরজা খুলে যে এমন দৃশ্য দেখতে হবে তা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি তিনি। এই ঘটনায় শোকের ছায়া গোটা পরিবারে। কিন্তু কেন এমন ঘটনা বর্ষা ঘটাল, তা কেউই বুঝতে পারছেন না।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, টেস্টে ভালো ফল করেছিল বর্ষা। উচ্চ মাধ্যমিকেও ভালো ফল করবে এমন আশা ছিল। সে নিজেও খুব আত্মবিশ্বাসী ছিল। কিন্তু আচমকাই যেন সব ওলট-পালট হয়ে গেল। মৃতার কাকা জানিয়েছেন, পরীক্ষা যত এগিয়ে আসছিল ততই আত্মবিশ্বাস হারাতে শুরু করেছিলেন বর্ষা। খাওয়া-দাওয়া কম করে দিয়েছিল। মাঝে-মধ্যেই নাকি সে বলত, তাকে কে ডাকছে, তার শরীর খারাপ লাগছে! এই বক্তব্য শুনে মনে করা হচ্ছে, মানসিক চাপে ভুগতে শুরু করেছিল বর্ষা। সেই মতো চিকিৎসকের কাছেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সোমবার সকালে বাড়ির মধ্যেই ফ্যানে দড়ির ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়ে সে। বিষয়টি জানতে পেরে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে কোতুলপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। পরিবারের সদস্যদের দাবি, মূলত মানসিক অবসাদেই সে আত্মহত্যা করেছে।
অন্যদিকে, পুলিশের পক্ষ থেকে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করে ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।