
বিপ্লব দাশ : বিশ্বের মহাকাশ বিজ্ঞানের মেঘ কাটল। পৃথিবীতে ফিরলেন সুনীতা উইলিয়ামস এবং বুচ উইলমোর। ৮ দিনের জায়গায় ২৮৬ দিন, দীর্ঘ এক অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিল সারা বিশ্ব। চোখের সামনে ভাসছিলেন কল্পনা চাওলা, এক মর্মান্তিক অনন্ত সমাধির কাহিনি ! মেঘ সরিয়ে তাই সুনীতাদের মুখের হাসি দেখে আনন্দোশ্রুতে ভেসেছে পৃথিবী।
আনন্দিত আমরাও। কোনো অভিনন্দনই যথেষ্ট নয় এই দুই মহাকাশচারীর জন্য। আজ থেকে যেন পৃথিবীর এক নতুন যুগের সূচনা হল। যতদিন এই মানব জাতি থাকবে ততদিন উজ্জ্বল হয়ে থাকবে এঁদের মহাকাশ জয়ের কথা। কল্পনাও যেন তাঁর অনন্তলোক থেকে নেমে এসে ভাগ করে নিলেন স্বপ্ন পূরণের আনন্দ। সুনীতার এই মহাকাশ জয় ভারতীয়দের কাছেও বিশেষ গর্বের। কারণ, কল্পনা চাওলার মতো তিনিও জন্ম সূত্রে ভারতীয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লিখেছেন ‘ওয়েলকাম ব্যাক। গোটা বিশ্ব তোমাদের মিস করছিল…’। যেহেতু জন্মসূত্রে সুনীতা গুজরাটি তাই মোদীর এই আন্তরিকতার আলাদা একটা তাৎপর্য রয়েছে। যাঁদের প্রয়াসে সুনীতারা সুরক্ষিত ভাবে ফিরে এসেছেন তাঁদেরও কুর্নিশ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এই মহাকাশ জয়ের পথ ধরে হয়তো ভবিষ্যতে আরও অনেকেই সুনীতাকে অনুসরণ করবে। ভারতেরও মহাকাশ বিজ্ঞানে যে সাফল্য আছে তারও অগ্রগতি হবে। সুনীতার পথ ধরে মহাকাশ গবেষণায় পৃথিবীর এগোবে নক্ষত্রলোকে এমন আকাঙ্ক্ষা এখন আর নিতান্তই কল্পনা নয়। ভারতও যে তার অনুসারী হবে এটা না ভাবার কিছু নেই। চন্দ্রযানই তা জানিয়ে দিয়েছে অনেক আগে। এতো হল ভবিষ্যতের কথা, কিন্তু এতবড় সাফল্যের মধ্যেও কোথায় যেন কল্পনাহত হচ্ছি আমরা। তাই এখন সবকিছু সরিয়ে সুনীতা ও বুচের শারীরিক সুস্থতা কামনা করাটাই প্রয়োজন। কারণ মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণের কোনও অস্তিত্ব নেই। যার ফলে এতদিন মাধ্যাকর্ষণহীন অবস্থায় থাকতে হয়েছে এই দুই নভোশ্চরকে। এর একটা বড়সড় প্রভাব পড়েছে তাঁদের শরীরে। মহাকাশে কাটানোর জন্য সুনীতাদের শরীর যে পরিবর্তন এসেছিল, পৃথিবীতে ফেরার পর মাধ্যাকর্ষণের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এরমধ্যেই দেখা গেছে, আগের তুলনায় সুনীতাদের মাথা ফুলেছে, পা-ও খানিক সরু হয়েছে।