
ওঙ্কার ডেস্ক : পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পরবর্তী পরিস্থিতিতে প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক ডাকলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ইতিমধ্যে ভারতের সমস্ত রাজ্যে বসবাসকারী পাকিস্তানি নাগরিকদের দেশে ফেরত পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীদের ফোন করে পাকিস্তানিদের খুঁজে খুঁজে তাড়ানোর কথা বলেছেন অমিত শাহ্। দেশজুড়ে পহেলগাঁওয়ের ঘটনার নিন্দা ও ক্ষোভ এখন চরম আকার নিয়েছে। কেন্দ্রের যে কোনও কড়া পদক্ষেপকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন বিরোধীরাও। সর্বদলীয় বৈঠকে বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও গোয়েন্দা বিভাগের শীর্ষ আধিকারিকরা সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতাদের পহেলগামের ঘটনার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর কড়া বার্তার পর এবার প্রত্যাঘাত জোরদার হচ্ছে। কূটনৈতিক স্তরে পাঁচটি বাণ ইতিমধ্যেই ছোঁড়া হয়েছে। যেখান থেকে দানা বাঁধছে যুদ্ধ পরিস্থিতি।
শুক্রবার সকাল থেকে ভূস্বর্গে সেনা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। কাশ্মীর জুড়ে এখন কার্যত যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি। সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে চলেছে যুদ্ধের মহড়া। বেছে নেওয়া হয়েছে থর মরুভূমিকে। চরম প্রত্যাঘাত যে শুধু সময়ের অপেক্ষায় তেমন একটা আবহ তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই কূটনৈতিক স্তরে পদক্ষেপ করল কেন্দ্র। সূত্রের খবর পাকিস্তানের সমস্ত ভিসা বাতিল করে দেওয়া হবে। যতদূর জানা যাচ্ছে, বাতিল করা হবে মোট ১৭ ধরনের ভিসা। সন্ত্রাসবাদ নির্মুল করতে যোগ্য পদক্ষেপ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তিনি জানিয়েছেন, “শাস্তি পাবে। শাস্তি হবেই হবে”। সন্ত্রাসবাদকে তিনি ধুলায় মিশিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। তাঁর কথায়, “এবার সন্ত্রাসবাদীদের বেঁচে থাকা জমিটুকুও মাটিতে মিশিয়ে দেওয়ার সময় এসেছে। ১৪০ কোটি ভারতীয়ের ইচ্ছাশক্তি এবার সন্ত্রাসবাদীদের কোমর ভেঙে দেবে।’
এর আগেই দিল্লি নির্দেশ দেয়, সব পাকিস্তানিরা ভারতে রয়েছেন, তাদের অবিলম্বে বেরিয়ে যেতে হবে। ঘোষণার পরপরই শুরু হয়েছে পাকিস্তানিদের ফিরে যাওয়া। গত বুধবারই ভারত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল। জানিয়েছিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়তে হবে পাকিস্তানি নাগরিকদের। বন্ধ করে দেওয়া হয় আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত। এছাড়াও বলা হয়, ভারত থেকে যাঁরা বৈধ নথিপত্র নিয়ে পাকিস্তান গিয়েছেন, তাঁদের দেশে ফিরতে হবে ১ মে-র মধ্যে। কোনও পাকিস্তানি নাগরিক আর ভারতে আসতে পারবেন না। পাকিস্তানি নাগরিকরা পাবেন না ভারতের ভিসা। আর এবার ১৭ ধরনের ভিসা বাতিলার সিদ্ধান্ত নিল ভারত। ইতিমধ্যেই দিল্লি জানিয়েছে, SAARC ভিসা নিয়ে আর এদেশে আসা যাবে না। যে সমস্ত পাকিস্তানি নাগরিককে SPES ভিসা দিয়েছিল ভারত, তা বাতিল বলে গণ্য হবে। এছাড়া ভারতে থাকা পাকিস্তানের কূটনীতিকদেরও এক সপ্তাহের মধ্যে ভারত ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের মধ্যেও তৎপরতার খবর মিলছে। বৃহস্পতিবারই জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠক ডাকেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাদ শরিফ। যেখানে উপস্থিত ছিলেন সেনাপ্রধান আসিম মুনির এবং পাক সরকারের মন্ত্রীরা। চাপের মুখে পড়ে পাল্টা শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করছে ইসলামাবাদ। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে করাচি উপকূলে পাকিস্তানকে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করতে দেখা গেছে।