
বিপ্লব দাশ : এই সময়টা এমন, যেখানে বিশ্বের শিক্ষিত সমাজকে অনেকটাই প্রভাবিত করে ফেলেছে AI-র ভেল্কি। বলা ভালো, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্রমাগত আমাদের বিশ্বকে বদলে দিচ্ছে। সহজ শ্রম, অভিনবত্ব এবং আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের মতো ভীষণ ভাবে আকৃষ্ট করছে যুব সমাজকে। কারণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রায় প্রতিটি শিল্পে মানবতার ভবিষ্যৎকে রূপ দিচ্ছে। অনেকটা পৌরাণিক কাহিনির মতো, অলৌকি। ইতিমধ্যেই বিগ ডেটা, রোবোটিক্স এবং আইওটির মতো উদীয়মান প্রযুক্তির প্রধান চালিকাশক্তি এবং জেনারেটিভ এআই AI-এর সম্ভাবনা, তার জনপ্রিয়তাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। ২০২৩ সালের আইবিএম জরিপ অনুসারে, ৪২ শতাংশ এন্টারপ্রাইজ-স্কেল ব্যবসা AI-কে তাদের কাজের ক্ষেত্রে ভীষণ ভাবে ব্যবহার করেছে। আরও ৪০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এই প্রযুক্তির সাহায্যে তাদের কাজের কথা বিবেচনা করছে। এ ক্ষেত্রে আরও একটি পরিসংখ্যান মেলে, যা হল ৩৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠান তাদের কাজে জেনারেটিভ AI প্রয়োগ করেছে এবং ৪২ শতাংশ তা করার কথা ভাবছে। এত দ্রুত গতিতে এই পরিবর্তন আসার সঙ্গে সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে অবশ্যম্ভাবী কিছু পরিবর্তন আসছে।
১৯৫১ সাল থেকে AI নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু হয়। ক্রিস্টোফার স্ট্র্যাচি একটি AI কম্পিউটার প্রোগ্রামের প্রথম সাফল্যের কথা লিখেছিলেন। শুরুটা ছিল এক্কেবারে কম্পিউটার গেম নিয়ে। দিনে দিনে এখন সে বিশ্বের আমূল পরিবর্তনের ক্ষমতা ধরে। কিন্তু কথা হল, এতে মানুষের সহজাত মস্তিষ্ককে কি অলস করে দেবে না ? যেকোনো প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ভালো-মন্দ দিক থাকেই। প্রতিটি স্তরেই এখনই এর সুবিধা এবং ঝুঁকি নিয়ে প্রচুর বিতর্ক রয়েছে । নিশ্চিতভাবে এর সুবিধাগুলির মধ্যে রয়েছে কাজের সহজীকরণ, সময় সাশ্রয়, পক্ষপাতহীন এবং পুনরাবৃত্তিমূলক কাজগুলিকে আপনা থেকেই সমাধান করার ক্ষমতা। কিন্তু একই সঙ্গে এটি ব্যয়বহুল, কর্মসংস্থান সংকোচন এবং আবেগ ও সৃজনশীলতার অভাব। তাহলে এর সার্বিক গ্রহণযোগ্যতা কোথায় ? ইতিমধ্যে এই বিষয়ে পণ্ডিত সমাজে আওয়াজ উঠেছে, AI উল্লেখযোগ্যভাবে কর্মসংস্থানের পথ বন্ধ করবে, অর্থাৎ বিশ্ব জুড়ে বিপুল বেকারত্ব তৈরি করবে। বিশেষ করে ভারত এবং উন্নতশীল দেশগুলিতে কর্মসংস্থানের দুর্যোগ ঘটাবে। দেশের অগ্রগতির ভিত্তিতেই রয়েছে কর্মসংস্থান, সেখানেই যদি প্রবল বাধা আসে তাহলে কী এই প্রযুক্তি নির্ভরতা সভ্যতাকে উলটো দিকে নিয়ে যাবে না তো !