
বিপ্লব দাশ : লন্ডনের হোটেলে মহম্মদ ইউনুস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার বৈঠক ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠছে। শুধুমাত্র স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্য নিয়ে দুই পক্ষের সমঝোতা ভবিষ্যতে কী দাঁড়াবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ দেখা দিচ্ছে। তবে এই বৈঠক বাংলাদেশের রাজনীতিতে, বিশেষ করে আওয়ামী লিগের অন্দরে একটি ধারণা আপাতত মিথ্যা বলে মনে হচ্ছে। কারণ, যাঁরা ভেবেছিলেন বিএনপি ও সরকার পক্ষ নিজেদের মধ্যে ঠোকাঠুকি করে জট পাকাবে, লন্ডনের এই বৈঠক তাদের ভাবনাকে ইতিমধ্যে মিথ্যা প্রমাণ করেছে। এবং এটাই মনে হচ্ছে, দু-পক্ষই তলে তলে একটা বোঝাপড়ার দিকে এগোচ্ছিল। যদিও ইউনুসকে ঘিরে তৈরি হওয়া শক্তিবলয় নতুন দেশ গড়ার নামে ৭১-এর শিকড় উপড়ে ফেলতে যে ভাবে উদ্যোগী হয়েছে, যে ভাবে বাংলাদেশে ইসলামিক খিলাফত প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর, তাদের সঙ্গে বিএনপি-র শুধুমাত্র ক্ষমতা দখলের হিসেব কতদূর চলবে তা নিয়েও সংশয় থেকে যায়। এর আগে, বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার দল একাধিকবার অভিন্ন ইস্যুতে পাশাপাশি হাঁটলেও তা ছিল রাজনৈতিক প্রক্রিয়া। ইউনূসের মতো একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তির সঙ্গে ক্ষমতা লাভের সমীকরণ কী করে মিলবে তা ভাববার বিষয়।
তাই মহম্মদ ইউনুস ও তারেক জিয়ার বোঝাপড়া দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা কম। বরং অচিরেই ভেঙে যাবার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এই সন্ধি আসলে আমেরিকার স্বার্থরক্ষায় তাদেরই নির্দেশিত পথে চালিত করার অভিপ্রায় কাজ করছে ইউনূসের মধ্যে। সেই কারণে লন্ডনে ইউনুস-তারেক বৈঠক ভবিষ্যতে, এমনকী অদূর ভবিষ্যতেই ভেঙে যাওয়া অসম্ভব নয়। ইউনুস আসলে বিএনপির রাস্তায় নামা আটকাতেই তারেকের সঙ্গে কার্যত কোলাকুলি সেরে এলেন। বিএনপির জন্য লন্ডন ইভেন্ট যে ঐতিহাসিক ভুল হবে তা দেখা যাবে যখন ভোটের আগে মহম্মদ ইউনুস ঝুলি থেকে নতুন নতুন মার্কিন এজেন্ডা সামনে আনবেন।