
নিজস্ব সংবাদদাতা : হাওড়ার বেলগাছিয়ার ভাগাড়-বিপর্যয় কে সামনে রেখে এবার কলকাতার ধাপাকে নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে কলকাতা পুরসভা । জানা গেছে প্রায় ১১ বছর আগে ধাপার বিপদ সম্পর্কে কলকাতা পুরসভাকে সতর্ক করেছিল ব্রিটিশ ডেপুটি হাই কমিশনারের অফিস।
একটি নথির মাধ্যমে ব্রিটিশ ডেপুটি হাই কমিশন জানিয়েছিল, ধাপা থেকে প্রতি বছর গড়ে ১৬.৮ লক্ষ কিলোগ্রাম মিথেন ও কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস নির্গত হয়। সেখানেই শেষ নয় ২০১৩-২০২২ সালের মধ্যে ধাপা থেকে ২৫ কোটি কিলোগ্রাম কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়। প্রশ্ন উঠেছে, দুষণের পাশাপাশি বেলগাছিয়ার পুনরাবৃত্তি কি ধাপার ক্ষেত্রে ঘটতে পারে ?
জঞ্জালের জেরে দূষণ হচ্ছে এলাকা। কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা) দেবব্রত মজুমদার এ বিষয়ে বলেন, ‘‘হাওড়ার বেলগাছিয়ার মতো পরিস্থিতি ধাপা ডাম্পিং গ্রাউন্ডের নয়। ধাপায় জনবসতি অনেক দূরে। তবু আমরা বিকল্প ধাপা তৈরি করতে ধাপার পাশেই ৭০ হেক্টর জমি চাষিদের কাছ থেকে কিনব।’’ পুরসভার এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘এ বিষয়ে অর্থ দফতরের অনুমোদনও মিলেছে।’’
কলকাতা পুরসভার কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক আধিকারিক সোমবার বলেন, ‘‘মাত্র ৩৫ একর জায়গা জুড়ে কলকাতা-সহ আশপাশের উপনগরীর আবর্জনার ভার আর নিতে পারছে না ধাপা। আমরা আগেই পুর কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে জানিয়েছিলাম। হাওড়ার বেলগাছিয়া ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ধস নামার পরে আমাদের চিন্তা বেড়েছে।’’
পরিবেশবিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী সংবাদ মাধ্যমে অভিযোগ জানিয়েছেন, ‘‘কলকাতায় উৎস থেকে বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি চালু হলেও তা এখনও পুরো বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে ধাপায় বর্জ্যের পাহাড়ের ভার বেড়েই চলেছে। সেখানে ময়লা ফেলার বিকল্প জায়গা না করলে অদূর ভবিষ্যতে হাওড়ার বেলগাছিয়ার মতো দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা প্রবল।’’ পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেছেন, ‘‘কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে বিকল্প জায়গা না গড়লে বিপদ আসন্ন।’
পুরসভার সূত্রের খবর আগে ষাট একর জায়গা জুড়ে ঢাকায় আবর্জনা ফেলা হতো। কিন্তু জাতীয় পরিবেশ আদালত দেশ জুড়ে ভাগাড়ের লিগেসি ওয়েস্ট প্রক্রিয়াকরণের নির্দেশ দেওয়ার পর ধাপাতেও গত বছর ধরে সেই কাজ চলছে।