
স্পোর্টস ডেস্ক : পাঁচ গোলের লজ্জার হার থেকে বাঁচল ইস্টবেঙ্গল।নোয়া সাদুই, কার্লোস মার্টিনেজরা গোল মিসের বন্যা না বইয়ে দিলে মুখ লুকোনোর জায়গা পেতেন না কার্লেস কুয়াদ্রাত। বিপক্ষের নৈপুণ্যের অভাবের পাশাপাশি ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণ এবং বাকিটা ভাগ্যের জোরে গোলের মালা পরে মাঠ ছাড়ার হাত থেকে রেহাই পেল লাল হলুদ। একাই হ্যাটট্রিক করতে পারতেন নোয়া। দুটো নিশ্চিত গোল মিস মার্টিনেজের। শেষমেষ একতরফা ম্যাচে এক গোলে হার ইস্টবেঙ্গলের। মান্ডবীতে ভেসে গেল সুপার সিক্সের স্বপ্ন। বুধবার নোয়া সাদুইয়ের করা একমাত্র গোলে গোয়ার কাছে ০-১ এ হার লাল হলুদের। যার ফলে সুপার সিক্সের সম্ভাবনা আরও কঠিন হল। ১৮ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে ন”নম্বরেই ইস্টবেঙ্গল। বাকি চার ম্যাচ জিতলেও ৩০ পয়েন্টে পৌঁছবে কলকাতার প্রধান। ইতিমধ্যেই টেবিলের প্রথম চার দলের পয়েন্ট তার থেকে বেশি। ১৭ ম্যাচে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে কেরল ব্লাস্টার্স। ধরে নেওয়াই যায় বাকি পাঁচ ম্যাচ থেকে তাঁরা অনায়াসেই দু”পয়েন্ট বা তারও বেশি পাবে। অর্থাৎ একটাই জায়গা বাকি থাকছে। ষষ্ঠ স্থানের জন্য লড়াই হবে ইস্টবেঙ্গল, বেঙ্গালুরু, জামশেদপুর, নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড, চেন্নাই এবং পাঞ্জাবের মধ্যে। একমাত্র হায়দরাবাদ ছাড়া খাতায় কলমে বাকিদের এখনও সুপার সিক্সে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে ইস্টবেঙ্গল যা খেলছে, তাতে মিরাকেল না হলে কুয়াদ্রাতের দলের কোয়ালিফাই করা অসম্ভব। পরের ম্যাচই ডার্বি। ইস্টবেঙ্গলের বাকি তিন ম্যাচ কেরল ব্লাস্টার্স, বেঙ্গালুরু এবং পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে। তারমধ্যে দুটোই অ্যাওয়ে ম্যাচ।সারা ম্যাচে যেখানে সাতটি শট লক্ষ্যে রেখে একটিকে গোলে পরিণত করে এফসি গোয়া, সেখানে ইস্টবেঙ্গল সারা ম্যাচে একটিমাত্র শট লক্ষ্যে রাখতে পারে, তাও সেটি নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার ছ’মিনিট আগে। প্রতিপক্ষের বক্সে গোয়ার ফুটবলাররা যেখানে ৪৬ বার বলে পা লাগান, সেখানে ইস্টবেঙ্গল প্রতিপক্ষের বক্সে ১২ বারের বেশি বল ছুঁতে পারেনি।
এই হারের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে কোচ কুয়াদ্রাত সাংবাদিকদের বলেন, “ওরা আজ শরীরী লড়াইয়ে জিতেছে। তাই ওদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী হয়ে ওঠা খুবই কঠিন হয়ে ওঠে। বলের গতিবিধি আগাম বোঝার ব্যাপারেও ওরা আমাদের ছেলেদের পিছনে ফেলে দিয়েছে। মাঝমাঠে লোক বাড়িয়ে আমরা সুবিধা পাওয়ার চেষ্টা করি। ওদের ৪-৪-২-এর বিরুদ্ধে আমরা তাই ৪-৩-৩-এ খেলি। কিন্তু প্রথমার্ধে আমরা প্রায়ই বারবার বলের নিয়ন্ত্রণ হারাই। ওরা আমাদের এই ভুলই কাজে লাগিয়ে নেয়। এছাড়া শরীরী সুবিধা তো পেয়েইছে”।
খেলোয়াড়দের ক্লান্তিকেই পারফরম্যান্সের রেখচিত্র নিম্নগামী হওয়ার কারণ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করে কোচ বলেন, “আমাদের গত চার সপ্তাহে আটটা ম্যাচ খেলতে হয়েছে, যা আমাদের ছেলেরা ঠিকমতো নিতে পারছে না। অক্টোবর, নভেম্বরে কম ম্যাচ খেলার পরে হঠাৎ এক মাসে আটটা ম্যাচ খেলতে হওয়ায় ফুটবলাররাও সমস্যায় পড়ে গিয়েছে। তার ওপর সল, পার্দোর চোটের ফলে চাপটা আরও বেড়ে যায়। যে বিদেশীরা নতুন এসেছে, যেমন ফেলিসিও, ভাজকেজ, প্যানটিচ, তাদের দলের কৌশল ভাল করে বোঝার আগেই মাঠে নেমে পড়তে হয়। ওদের কাছ থেকে আমাদের বেশিই চাইতে হয়েছে, যা ওরা সব সময় দিতে পারেনি। ফুটবলে এ রকম হয়। একরকম পরিকল্পনা থাকে। কিন্তু হঠাৎ চোট-আঘাত সমস্যা এসে যাওয়ায় সব ভেস্তে যায়”।
এ দিনের হারের পরেও অবশ্য ১৮ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফের দৌড়ে টিকে রইল ইস্টবেঙ্গল এফসি। অঙ্কের হিসেব অবশ্য বলছে পাঁচ নম্বরে থেকেও লিগ শেষ করতে পারে তারা। তাই কোচ এখনও আশাবাদী। বললেন, “আমাদের এখনও চেষ্টা করে যেতে হবে। এখনও ১২ পয়েন্ট পেতে পারি আমরা। আমাদের ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখতে হবে”।