
স্পোর্টস ডেস্ক :-এই ইস্টবেঙ্গল লড়াই করতে জানে । ফিরে আসতে জানে। ফুটবলাররা লাল হলুদ জার্সির মর্যাদা দিতে জানে। কোচ কালস কুয়াদ্রাত যেন ইস্টবেঙ্গলে পুরোনো শব্দ গুলোই ফিরিয়ে এনেছেন। নাহলে ১ গোলে পিছিয়ে থেকে খেলার শেষ মুহূর্তে সমতা ফেরানো ম্যাচেও এক্সট্রা টাইমে বাজিমাত করে সার্জিও লোবেরার ওড়িশাকে ৩-২ গোলে হারানো সম্ভব। সুপার কাপ ঘরে তুললো ইস্টবেঙ্গল।১২ বছর পরে শতবর্ষ প্রাচীন ক্লাবে এলো সর্বভারতীয় ট্রফি।৪ মিনিটে ওড়িশা মাঝমাঠে ফাউল করে বসে। পার্দো ফ্রি-কিক নিলে, সেটি প্রথমে ক্লিয়ার করে দেওয়া হয়। সেই বল পেয়ে বক্সের বাইরে থেকে নন্দকুমার শট নেওয়ার চেষ্টা করলে, মাউইয়া সেটি বাঁচিয়ে দেন।১২ মিনিটে রয় কৃষ্ণ ডানদিক থেকে বল নিয়ে উঠে আসে, তার পর বাঁ-দিকে সরে এসে বক্সের বাইরে থেকে শট নেয়। অল্পের জন্য শট গোলপোস্টের পাশ ঘেষে বেরিয়ে যায়। ১৫ মিনিটে আবার রয় কৃষ্ণ বল নিয়ে প্রায় মাঝমাঠ থেকে উপরে ওঠেন। এর পর মরিসিও বল পেয়ে শট মারলে । অল্পের জন্য গোল হয়নি ।৩২ মিনিটে ইস্টবেঙ্গল ফ্রি-কিক পায়, পারদো সেট-পিস থেকে ফ্রি-কিক নেন আর তাঁর জোরালো একটি শট সেভ করেন ওড়িশার গোলকিপার।এরপরই গোল খেয়ে বসে ইস্টবেঙ্গল।৩৯ মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে আহমেদ জহৌয়ের থেকে বল পান রয় কৃষ্ণ। কৃষ্ণ বুদ্ধি করে ডিফেন্ডারদেরকে তাঁর দিকে টেনে নিয়ে এসে, মরিসিও-কে বল বাড়ান। সেই বল ধরেই ডান পায়ের জোড়ালো শটে গোল করেন মরিসিও। গোটা গ্যালারিতে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা হতাশায় ডুব দেয়। প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-০ ব্যবধানে।দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই জোড়া পরিবর্তন করেছে ইস্টবেঙ্গল। সিভেরিও এবং মান্দারের পরিবর্তে নামানো হল মহেশ আর লালচুংনুঙ্গাকে। আর তাতেই বাজিমাত ৫২ মিনিটেই সমতা ফেরায় ইস্টবেঙ্গল। দুরন্ত গোল করলেন নন্দকুমার। মহেশ উইথ দ্য বল দারুণ দৌড়ে এসে মাপা শটে বল বাড়ান নন্দকে । নন্দ বল পেয়ে একক দক্ষতায় ওড়িশার ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে আর তার পর গোলরক্ষককে বিট করে গোল করে যান।এরপর ম্যাচের আক্রমণ আরও বাড়ে।৬০ মিনিটে আগের মিনিটেই নন্দকুমারকে ফাউল করেন দেলগাডো। তবে পেনাল্টি দিলেন না রেফারি ভেঙ্কটেশ। যা নিয়ে মাঠে উত্তেজনাও দেখা যায়। পরের মিনিটেই বোরহাকে ফাউল করা হলে, পেনাল্টি পায় ইস্টবেঙ্গল।৬২ মিনিটে ক্রেসপো পেনাল্টি থেকে গোল করেন।৭৪ মিনিটে একটি পরিবর্তন করে ইস্টবেঙ্গল। নন্দকুমারকে তুলে নিয়ে বিষ্ণুকে নামালেন কুয়াদ্রাত। যদিও আক্রমণের গতি কমায়নি।৮৩ মিনিটে প্রতি আক্রমণে ওঠে ইস্টবেঙ্গল। বিষ্ণুর সঙ্গে আবার ওয়ান-অন-ওয়ানে মাউইয়া। কিন্তু দুরন্ত সেভ করেন মাউইয়া। অতিরিক্ত ৭ মিনিট দেওয়া হয় । আর একদম শেষ সময়ে তখনই মরিসিও বল নিয়ে ইস্টবেঙ্গল বক্সের ঢুকছিলেন। লাল হলুদ গোলকিপার প্রভসুখন গিল এগিয়ে এসে তাঁকে ফাউল করেন। ওড়িশা এফসিকে পেনাল্টি দেয় রেফারি। আর মরিসিও পেনাল্টি থেকে গোল করে যান । ম্যাচ গড়ায় এক্সট্রা টাইমে। আর এক্সট্রা টাইমে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন সৌভিক চক্রবর্তী। ১০ জনে হয়ে গিয়েও ইস্টবেঙ্গলের গতি কমেনি।১১১ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দিলেন সেই ব্রাজিলিয়ান নায়ক ক্লেটন সিলভা।ওড়িশা এফসি গোলকিপার পাস করেছিলেন নরেন্দ্রকে। বল ধরে রাখতে পারেননি নরেন্দ্র। তাঁর থেকে বল কেড়ে নিয়ে অনবদ্য গোল করলেন ক্লেটন । তবে গোলের পর জার্সি খুলে সেলিব্রেশন করে হলুদকার্ড দেখেন এই গোলমেশিন।তবে শেষভালো যার সব ভালো। যোগ্য চ্যাম্পিয়ন হয়েই কলিঙ্গ ছাড়লো টিম লাল হলুদ। সোমবার ক্লাবে হবে সেলিব্রেশন।