
ওঙ্কার ডেস্ক : ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর জন্য এই ন’টি জায়গাই বেছে দিয়েছিল ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘র’, গোয়েন্দা সূত্রে এই খবর মিলেছে। সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করা হয়েছিল, কোন বাহিনী কোথায় আক্রমণ শানাবে। পরিকল্পনা মাফিক দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয় ভারতীয় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বায়ুসেনাকে। এই ভাবে পহেলগাঁওয়ের জঙ্গিহানার ঠিক ১৫ দিনের মাথায় পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটিগুলিতে আঘাত হানল ভারত। গুঁড়িয়ে দেওয়া হল পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মাটিতে ঘাঁটি গেড়ে থাকা তিনটি জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রভাবিত এলাকা। মঙ্গলবার মধ্যরাতে মোট নয় জায়গায় আক্রমণ করেছে ভারত।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানাচ্ছে, সাবধানতার সঙ্গে এই প্রত্যাঘাত করা হয়েছে। জল, স্থল এবং অন্তরীক্ষে হামলা চালানোর জন্য অনেক আগে থেকেই রুট ম্যাপ তৈরি করা হয়েছিল। কোনও সাধারণ নাগরিক নয়, সেনার লক্ষ্যবস্তু ছিল জঙ্গি এবং জঙ্গিঘাঁটি। সেই মতো মঙ্গলবার রাত ১টা ৪৪ মিনিটে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমাদের পদক্ষেপ সুনির্দিষ্ট, পরিমিত এবং তা প্ররোচনামূলক নয়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কোনও পরিকাঠামোয় আঘাত হানা হয়নি। লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ এবং আঘাত হানার প্রশ্নে ভারত উল্লেখযোগ্য সংযম দেখিয়েছে।”
পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের বাহওয়ালপুরের উপকণ্ঠে এনএইচ-৫ যেখান দিয়ে গিয়েছে, সেখানে প্রায় ১৫ একর জমি জুড়ে জৈশ-ই-মহম্মদ (জেইএম)-এর প্রধান প্রশিক্ষণ এবং প্রচারকেন্দ্র। যা জৈশের হেডকোয়ার্টার বলে চিহ্নিত। ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলায় যুক্ত ওই জঙ্গিগোষ্ঠীর ঘাঁটিতেই আক্রমণ চালিয়েছিল ভারত। পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের শহর মুরিদকে বলা হয় লশকর-ই-ত্যায়বার ‘মুলুক’। ২০০৮ সালে মুম্বই হামলায় মূলচক্রী হাফিজ সইদের বসবাস ছিল এই মুরিদকে। মঙ্গলবার রাতে সেখানেও হানা দিয়েছে ভারতীয় সেনা। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, যে নয়টি জায়গায় ভারতীয় সেনা প্রত্যাঘাত করেছে, তার চারটি জায়গা পাকিস্তানে এবং পাঁচটি জায়গা পাক অধিকৃত কাশ্মীরে। বাহাওয়ালপুর, মুরিদকে এবং সিয়ালকোট, মূলত এই তিন জায়গাই ছিল লক্ষ্যবস্তু। এ ছাড়া রয়েছে, মুজফ্ফরাবাদ, গুলপুর, ভীমবের, চাক আমরু, বাগ এবং কোটলি। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, প্রযুক্তি ও সূত্রকে কাজে লাগিয়ে এই ন’টি জায়গাকে চিহ্নিত করেছিল ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা। সেই তথ্য যায় ভারতীয় সেনার কাছে। এরপরই শুরু হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রস্তুতি। তার পরেই আসে এই কাঙ্ক্ষিত প্রত্যাঘাতের রাত। হামলায় ব্যবহার স্ক্যাল্প এবং হ্যামার মিসাইলের মতো বিশেষ গোলাবারুদ।